শান্তিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী নিহন হিদানকায়ো’র সহ-সভাপতি তোশিউকি মিমাকি
এ বছর শান্তিতে নোবেল পেয়েছে জাপানে পারমাণবিক বোমা হামলার ধ্বংসযজ্ঞ থেকে বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের সংগঠন নিহন হিদানকায়ো।
সংগঠনটির সহ-সভাপতি তোশিউকি মিমাকি বলেছেন, ‘ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় শিশুদের অবস্থা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় পারমাণবিক বোমা হামলার শিকার জাপানের মতোই।’ খবর আনাদোলু এজেন্সির।
টোকিওতে এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেওয়ার সময় তিনি বলেন, ‘গাজায় রক্তাক্ত শিশুদেরকে তাদের পিতামাতা ঘরে আটকে রাখতে বাধ্য হচ্ছে। এই পরিস্থিতি ৮০ বছর আগের জাপানের মতোই। হিরোশিমা ও নাগাসাকির শিশুরা তাদের পিতাকে যুদ্ধে এবং মাকে বোমা হামলায় হারিয়েছিল।’
তিনি বলেন, ‘জনগণ শান্তি কামনা করছে। কিন্তু রাজনীতিবিদরা যুদ্ধ করার জন্য জোর দিয়ে বলছেন, আমরা জয়ী না হওয়া পর্যন্ত থামব না। আমি মনে করি, এটি রাশিয়া এবং ইসরায়েলের ক্ষেত্রে সত্য। আমি সবসময় হতবাক হয়ে ভাবি, জাতিসংঘের শক্তি এটিকে থামাতে পারেনি।’
পরমাণু অস্ত্র শান্তি আনে না বলেও সতর্ক করেন তিনি। তোশিউকি মিমাকি বলেন, ‘বলা হয়ে থাকে যে, পারমাণবিক অস্ত্রের কারণে বিশ্ব শান্তি বজায় থাকে। কিন্তু পারমাণবিক অস্ত্র সন্ত্রাসীরা ব্যবহার করতে পারে। যদি রাশিয়া ইউক্রেনের বিরুদ্ধে বা ইসরায়েল গাজার বিরুদ্ধে এটি ব্যবহার করে, তাহলে বিষয়টি সেখানে থেমে থাকবে না।’
১৯৪৫ সালের ৬ আগস্ট হিরোশিমায় যখন যুক্তরাষ্ট্র পারমাণবিক বোমা ফেলেছিল, তখন মিমাকির বয়স ছিল ৩ বছর। ওই হামলায় প্রাণ হারান ১ লাখ ৪০ হাজার মানুষ।
এর তিন দিন পর, আরেকটি বোমা নাগাসাকিতে আঘাত হানে। এতে আরও ৭০ হাজার মানুষ নিহত হোন। জাপান দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অবসান ঘটিয়ে ১৯৪৫ সালের ১৫ আগস্ট আত্মসমর্পণ করে।
২০২৪ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কার জাপানের নিহন হিদানকায়ো সংগঠনকে দেওয়া হয়েছে। পারমাণবিক অস্ত্রের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী জনমত গড়ে তোলার স্বীকৃতি হিসেবে জাপানি সংগঠনটিকে গতকাল শুক্রবার (১১ অক্টোবর) নোবেল পুরষ্কারে ভূষিত করা হয়।
১৯৫৬ সালে প্রতিষ্ঠিত নিহন হিদানকায়ো সংগঠনটি পারমাণবিক বোমা থেকে বেঁচে থাকাদের জন্য একটি কণ্ঠস্বর, যারা পারমাণবিক যুদ্ধের ভয়াবহতার সাক্ষ্য প্রদান করে এবং পারমাণবিক অস্ত্রের সম্পূর্ণ বিলুপ্তির পক্ষে সমর্থন করে।