ছবি: প্রতীকী
রাজধানী ঢাকার যানজট নিরসনে রিমোট কন্ট্রোলের মাধ্যমে সেমি অটোমেশন পদ্ধতিতে ট্রাফিক ব্যবস্থাকে নতুন করে ঢেলে সাজানো হচ্ছে। এ কারণে নগরবাসীকে সচেতন করে তুলতে সোমবার (২১ অক্টোবর) থেকে উদ্বোধন করা হচ্ছে ট্রাফিক সপ্তাহ। এদিন রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে সকালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী সপ্তাহের শুভ উদ্বোধন করবেন।
ডিএমপি কমিশনার মাইনুল হাসান বলেন, ট্রাফিক পুলিশ প্রতিটি ক্রসিং-এ রিমোট কন্ট্রোল নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকবে। ট্রাফিক অবস্থা অনুযায়ী রিমোট কন্ট্রোলের মাধ্যমে চলাচলের জন্য সবুজ লাল হলুদ বাতির সিগন্যাল দেবে। সিগনাল অনুযায়ী যান চলাচল করবে। বাড়তি ফোর্স প্রাথমিকভাবে রিমোট কন্ট্রোলের নির্দেশনা মানার জন্য যানবাহনকে বাধ্য করতে চেষ্টা করবে। সেন্ট্রাল অটোমেশনের মাধ্যমে দীর্ঘদিন চেষ্টা করেও রাজধানীর ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা সম্ভব হয়নি। বর্তমানে রাজধানীর ঢাকার প্রতিটি মোড়েই হাতের ইশারায় ট্রাফিক ব্যবস্থা চলছে। পাবলিক সদস্য সরাসরি অংশগ্রহণ করে ট্রাফিক ব্যবস্থা চালু রাখছে। উন্নত পৃথিবীর ট্রাফিক ব্যবস্থা ও বাংলাদেশের বাস্তব পরিস্থিতি অনুধাবন করে দীর্ঘ অভিজ্ঞতার আলোকে পরীক্ষামূলকভাবে রাজধানীতে রিমোট কন্ট্রোল সেমি-অটোমেশন ব্যবস্থা চালু করা হয়। এতে সুফল পাওয়া গেলে পুরো রাজধানীতেই তাই পাবে এ ব্যবস্থা চালু থাকবে।
এদিকে, প্রায় দুই কোটি মানুষের বসবাস রাজধানী ঢাকায় যানজট নিত্যদিনের সমস্যা। ঘর থেকে বের হলেই গন্তব্যমুখী মানুষের একটি টেনশন কখন পৌঁছানো যাবে। ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ভেঙে পড়ে পুলিশের ব্যবস্থা। জনতার ক্ষোভে ট্রাফিক বক্সসহ অন্যান্য সরঞ্জামাদি ধ্বংস হয়ে যায়। ডিউটি ফেলে ট্রাফিক পুলিশসহ বাড়ি চলে যায়। নতুন সরকার গঠনের পর কাজে যোগদান করে পুলিশ। ট্রাফিক পুলিশেও চেষ্টা করেও কোনভাবেই নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছে না ট্রাফিক ব্যবস্থা। বেশ কয়েকবার অটোমেশন পদ্ধতিতে রাজধানীতে ট্রাফিক ব্যবস্থা চালু করার আগেই বন্ধ হয়ে যায়। সরকারের ক্ষতি হয় শত কোটি টাকা। ডিএমপির নতুন কমিশনার মাইনুল হাসান যোগদান করার পর এবার রাজধানীর যানজট নিরসনে চালু করতে যাচ্ছেন সেমি-অটোমেশন পদ্ধতি। নগরীর ট্রপিক ব্যবস্থাকে আনা হচ্ছে রিমোট কন্ট্রোলড সেমি-অটোমেশন সিস্টেমের আওতায়।
তিনি বলেন, ৫ আগস্টের পর ভেঙে পড়া পুলিশ ব্যবস্থাকে পুনর্গঠন করে ঢেলে সাজানো হয়েছে। পুলিশের ওপর মানুষের আস্থা ও নির্ভরশীলতা বেড়েছে। পুলিশের সবচেয়ে বড় ইউনিট ডিএমপির ৩৭তম কমিশনার হিসেবে ৭ আগস্ট দায়িত্ব নেন বিএসএস ১৭ ব্যাচের কর্মকর্তা মো. মইনুল হাসান এনডিসি। ভেঙে পড়া একটি ইউনিটকে পুনর্গঠন করে ধীরে ধীরে কার্যকর করে তুলেছেন। যানজট নিরসন ও নগরীর অপরাধ নিয়ন্ত্রণে নানা উদ্যোগের কথা বলে তিনি ধীরে ধীরে পুলিশের প্রতি মানুষের আস্থা ফিরে এসেছে।
ঢাকা মহানগরী এলাকায় বর্তমানে যানজট মারাত্মক রূপ ধারণ করেছে। এই সংকট নিরসনে পুলিশ কী পদক্ষেপ নিয়েছে জানতে চাইলে মো. মাইনুল হাসান বলেন, যানজট কমানোর জন্য তিনটা বিষয় মুখ্য। তাকে বলা যায় থ্রি-ই। এর প্রথমটি হলো ট্রাফিক এডুকেশন, ট্রাফিক ইঞ্জিনিয়ারিং ও ট্রাফিক অ্যানফোর্সমেন্ট। ট্রাফিক এডুকেশন ও ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বিষয়টি পুলিশের হাতে নেই। লোকজন আইন মেনে চলতে চায় না। হঠাৎ রাস্তায় বসে আন্দোলন শুরু করেছে। সড়ক অবরোধ করে। আমরা তাদের অনুরোধ করে বলছি জনভোগান্তি সৃষ্টি করে বা জনগণকে জিম্মি করে কোনও আন্দোলন করবেন না। আপনারা সড়ক অবরোধ ছাড়া দাবি আদায়ের যেসব পদ্ধতি রয়েছে সেগুলো অনুসরণ করুন।
অপরদিকে, রাস্তায় খানাখন্দ থাকে, বিভিন্ন সংস্থা খোঁড়াখুঁড়ি করে থাকে। গণপরিবহনগুলো যেনতেনভাবে রাস্তায় রেখে দেয়। অনেক ভবন মালিকরা গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গা অন্য কাজে ব্যবহার করে। বাধ্য হয়ে গাড়ি সড়কে রাখতে হয়। খানাখন্দ ভরা রাস্তায় কোনও গাড়ি বিকল হলেও যানজট দেখা দেয়।