মা ইলিশ রক্ষায় লক্ষ্মীপুরের মেঘনা নদীতে ইলিশ মাছ ধরার ওপর ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা চলছে। নিষেধাজ্ঞা মেনে জেলেরা নদীতে মাছ শিকারে নামেননি। জেলে ট্রলার এবং নৌকা নদীর তীরে নোঙর করে রেখেছেন। ট্রলার মেরামত এবং জাল বুনে জেলেরা সময় পার করছেন।
নদীতে এবার ইলিশ কম ধরা পড়ায় জেলেদের আয়-রোজগারও কম হয়েছে। ফলে নিষেধাজ্ঞার ২২ দিনে পরিবার-পরিজন নিয়ে তারা দুশ্চিন্তায় রয়েছেন।
জেলা মৎস্য বিভাগ থেকে জেলার অর্ধলক্ষাধিক জেলের মধ্যে ৩৯ হাজার ৭৫০ পরিবারের জন্য ৯৯৩ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। প্রত্যেক জেলে পরিবারে ২৫ কেজি করে চাল দেওয়া হবে। প্রতি পরিবারের জন্য ২৫ কেজি চাল যথেষ্ট মনে করছেন না জেলেরা। সহায়তার পরিমাণ আরও বাড়ানোর পাশাপাশি প্রকৃত জেলেদের সহায়তার আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন।
মৎস্য বিভাগ থেকে জেলেদের নিষেধাজ্ঞা মেনে চলতে নদীতে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। আইন অমান্যকারী জেলেদের জেল-জরিমানাও করা হচ্ছে।
লক্ষ্মীপুরের কমলনগরের মতিরহাট এলাকার ট্রলার মালিক শাহ আলম বলেন, তার ট্রলারে ২২ জন মাঝি-মাল্লা মাছ শিকার করেন। তারা নিষেধাজ্ঞা শুরুর আগেই গভীর সমুদ্র থেকে উঠে এসেছেন। অবসর সময়ে জেলেরা এখন জাল বুনে নিচ্ছেন, অভিযান শেষ হলেই যাতে মাছ শিকারে নামতে পারেন।
তিনি বলেন, এবার তেমন-একটা মাছ ধরা পড়েনি। তাই আয়-রোজগারও কম হয়েছে। নিষেধাজ্ঞার ২২ দিন কীভাবে সংসার চলবে, জেলেরা দুশ্চিন্তায় রয়েছেন।
গত ১৩ অক্টোবর থেকে ইলিশ ধরার উপর নিষেধাজ্ঞা শুরু হয়েছে, চলবে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত।
ওই এলাকার জেলে নুর উদ্দিন বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞা মেনে নদী থেকে উঠে এসেছি। জাল মেরামত করে বাড়ি যাব। এবার অর্থ সংকটে আছি। মাছ তেমন ধরা পড়েনি। তাই পকেট ফাঁকা। আমাদের মধ্যে অনেক জেলে আছে, তারা সরকারি চালও পায় না। আবার জেলে নয়, এমন লোকজনও চাল পায়।’ জেলে রহমান বলেন, ‘মাছ ধরা বন্ধ। তাই অবসর সময়ে নৌকা মেরামত করে নিচ্ছি।’
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিল্লাল হোসেন বলেন, সরকার ঘোষিত ২২ দিন সারা দেশে ইলিশ আহরণ, পরিবহন, বাজারজাত, মজুদ, ক্রয়-বিক্রয়, বিনিময় নিষিদ্ধ ও দণ্ডনীয় অপরাধ। এ সময় আইন অমান্যকারীকে কমপক্ষে এক বছর থেকে সর্বোচ্চ দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ড অথবা পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করা হবে।
নিষেধাজ্ঞার সময়ে জেলেদের মাছ শিকারে বিরত রাখতে খাদ্য (চাল) সহায়তা দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।