সম্প্রতি পাহাড়ি ও বাঙালিদের মধ্যে সহিংসতার কারণে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত পার্বত্য তিন জেলা ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে প্রশাসন। ফলে পর্যটক শূন্য পড়েছে রাঙামাটি। পর্যটক না থাকায় এখন প্রতিদিন এক কোটি টাকার লোকসান হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। তাদের দাবি, যত দ্রুত সম্ভব নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে পর্যটকদের ভ্রমণের যেন সুযোগ করে দেওয়া হয়।
রাঙামাটি চেম্বার অব কমার্স ইন্ডাস্ট্রিজের তথ্যমতে, রাঙামাটিতে পর্যটনসংশ্লিষ্ট খাতের ওপর নির্ভর করে জীবিকানির্বাহ করেন প্রায় ৩০ হাজার মানুষ। বর্তমানে এই খাতের সবাই বেকার সময় কাটাচ্ছেন। পুঁজি হারানোর শঙ্কায় আছেন ব্যবসায়ীরা। শারদীয় দুর্গাপূজার ছুটিতে হোটেল-মোটেল বুকিং করেও পরে বাতিল করেছেন পর্যটকরা। ট্যুরিস্ট বোট, হাউজবোট ও কটেজগুলো নতুন করে সাজিয়ে তোলা হয়েছিল পর্যটকদের জন্য। নিষেধাজ্ঞার কারণে পর্যটক না আসায় এখন ক্ষতি পুষিয়ে নিতে হিমশিম খেতে হবে ব্যবসায়ীদের।রাঙামাটি চেম্বার অব কমার্স ইন্ডাস্ট্রিজের সহ-সভাপতি আলী বাবর জানান, ‘শুধু রাঙামাটি শহরে প্রতিদিন প্রায় এক কোটি টাকার ক্ষতির মুখে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। এর মূল কারণ পর্যটক না আসা। রাঙামাটিসহ তিন পার্বত্য জেলায় মানুষ পর্যটন ব্যবসার ওপর নির্ভর করে টিকে আছে।’
রাঙামাটি হাউজ বোট ওনার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি ও বার্গি লেকের পরিচালক বাপ্পী তঞ্চঙ্গ্যা বলেন, ‘দুর্গা পূজার টানা ছুটিতে হোটেল-মোটেল, রিসোর্টগুলো অগ্রিম বুকিং ছিল। নিষেধাজ্ঞার কারণে সেগুলোর বুকিং ক্যান্সেল করতে হয়েছে। ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত যদি নিষেধাজ্ঞা চলে তাহলে পর্যটন খাতে কোটি কোটি টাকার লোকসান হবে।’রাঙামাটি শহরে ৫৩টি হোটেল রয়েছে। বেশিরভাগ পর্যটকরা রাঙামাটি আসলে এসব হোটেলেই রাত্রিযাপন করেন। পর্যটক ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞায় হোটেল ব্যবসায়ীও বিপাকে।
রাঙামাটি হোটেল মালিক সমিতির সভাপতি মঈনুদ্দীন সেলিম জানান, গত কয়েক মাসের লোকসান পূজার এই ছুটিতে কাটিয়ে তোলার লক্ষ্য ছিল ব্যবসায়ীদের। ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞায় ব্যবসায়ীরা আরো লোকসানের মধ্যে পড়েছেন। অনেক হোটেলে কর্মচারী ছাটাই করতে হচ্ছে খরচ কমানোর জন্য।পর্যটন হলিডে কমপ্লেক্সের ব্যবস্থাপক আলোক বিকাশ চাকমা বলেন, ‘পর্যটক ভ্রমণ বন্ধ থাকায় আমাদের দৈনিক ক্ষতি লক্ষাধিক টাকা।’