ছবি: সংগৃহীত
বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম ঋণদাতা সংস্থা আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) বাংলাদেশ ও এদেশের জনগণের সমর্থনে ‘প্রতিশ্রুতিবদ্ধ’ বলে জানিয়েছেন ঢাকায় সফররত সংস্থাটির মিশন প্রধান ক্রিস পাপেজর্জিউ। সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সংস্থাটির ঢাকা অফিস থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ক্রিস পাপেজর্জিউ’র নেতৃত্বে আইএমএফ মিশন দল বাংলাদেশের সাম্প্রতিক উন্নয়ন এবং সরকারের সংস্কার কার্যক্রম নিয়ে আলোচনা করতে ২৪-৩০ সেপ্টেম্বর ঢাকা সফর করেছে। সোমবার পর্যন্ত মিশনটির কার্যক্রম শেষে একটি বিবৃতি দিয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক গণঅভ্যুত্থানে প্রাণহানি ও আহত হওয়ার ঘটনায় আমরা গভীরভাবে শোকাহত এবং এই কঠিন সময়ে বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করছি। একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সময়মত গঠন রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা পরিস্থিতি স্থিতিশীল করতে সাহায্য করেছে, অর্থনীতিতে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসতে সহায়ক ভূমিকা রেখেছে।
এতে বলা হয়, তবুও, অর্থনৈতিক কার্যকলাপ উল্লেখযোগ্যভাবে মন্থর হয়েছে, সাম্প্রতিক অশান্তি এবং বড় ধরনের বন্যার কারণে মুদ্রাস্ফীতি দুই অঙ্কের স্তরে বিরাজ করছে। পরিশোধের ভারসাম্যের অবনতি বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করেছে। একই সঙ্গে, কর রাজস্ব সংগ্রহ হ্রাস পেয়েছে, এর ফলে ব্যয়ের চাপ বেড়েছে এবং অভ্যন্তরীণ অর্থ পরিশোধের বকেয়া জমা হয়েছে। আর্থিক খাতের দুর্বলতা আরও প্রকট হয়ে উঠেছে। এই প্রেক্ষাপটে, কর্তৃপক্ষ ও আইএমএফ এই উদীয়মান চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় নীতি ও সংস্কারের ওপর উন্মুক্ত এবং ফলপ্রসূ আলোচনা করেছেন। আমরা এই চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতিতে প্রতিক্রিয়া হিসেবে ক্রমাগত আর্থিক কঠোরকরণ এবং অ-প্রধান মূলধন ব্যয়কে যুক্তিযুক্তকরণসহ নীতির সমন্বয় শুরু করার জন্য কর্তৃপক্ষের প্রচেষ্টাকে সমর্থন করি।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আইএমএফ বাংলাদেশের অবিচল অংশীদার। বাংলাদেশ এবং এর জনগণকে সমর্থন করার জন্য সম্পূর্ণ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। চলমান আইএমএফ-সমর্থিত কর্মসূচির কাঠামোর মধ্যে, আমরা বাংলাদেশের সংস্কার এজেন্ডাকে এগিয়ে নিতে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ চালিয়ে যাব। যার লক্ষ্য সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, প্রতিষ্ঠানকে শক্তিশালী করা এবং শক্তিশালী, টেকসই, ন্যায়সঙ্গত প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধির জন্য আমরা আইএমএফ-সমর্থিত কর্মসূচির অধীনে সংস্কার বাস্তবায়নের জন্য কর্তৃপক্ষের নতুন প্রতিশ্রুতিকে স্বাগত জানাই। আসন্ন ২০২৪ আইএমএফ ও বিশ্ব ব্যাংকের বার্ষিক সভায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে।
আইএমএফ মিশনপ্রধান বলেন, আইএমএফ দল বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষ এবং অন্যান্য স্টেকহোল্ডারদের তাদের আতিথেয়তা এবং অকপট আলোচনার জন্য কৃতজ্ঞ। দলটি অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান মনসুরসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে। দলটি বেসরকারি খাতের প্রতিনিধি, থিঙ্ক ট্যাঙ্ক, দ্বিপাক্ষিক দাতা এবং উন্নয়ন অংশীদারদের সঙ্গেও দেখা করেছে।
বাংলাদেশকে চলমান ৪৭০ কোটি মার্কিন ডলারের ঋণ কর্মসূচির অতিরিক্ত আরও ৩০০ কোটি ডলার দেবে আইএমএফ। এ ব্যাপারে সরকারের সঙ্গে সংস্থাটির প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে। জানা গেছে, ২৪ থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মিশনটি প্রায় সরকারি-বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে প্রায় ১৫টি বৈঠক করেছে।