সিলেট ও সুনামগঞ্জে আকস্মিক বজ্রপাতে সাত জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে সিলেটের জৈন্তাপুরে দুই জন, কানাইঘাটে দুই জন, কোম্পানীগঞ্জে একজন, গোয়াইনঘাটে একজন এবং সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুরে একজন নিহত হয়েছেন। শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ঝড় ও বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রপাত হলে তাদের মৃত্যু হয়।
স্থানীয়রা জানান, দুপুরে জৈন্তাপুর উপজেলায় বৃষ্টির সঙ্গে বিকট শব্দে বজ্রপাত শুরু হয়। এসময় ওয়াপদা বেড়িবাঁধ সংলগ্ন রাস্তায় থাকা আগফৌদ গ্রামের নূরুল হকের ছেলে নাহিদ আহমদ (১৩) ও একই ইউনিয়নের ভিত্রিখেল ববরবন্দ গ্রামের কালা মিয়ার ছেলে অটোরিকশা চালক আব্দুল মান্নান মনই (৪৫) নিহত হন।
জৈন্তাপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাজুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহ দুইটির সুরতহাল প্রস্তুত করেছে।
কানাইঘাট উপজেলায় বজ্রপাতে নিহত হন উপজেলার লক্ষ্মীপ্রসাদ ইউনিয়নের কেওটিহাওর গ্রামের আব্দুল মিয়ার ছেলে কালা মিয়া (৩০) ও বাড়ির পাশের নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে পৌরসভার বাসিন্দা দলইমাটি গ্রামের নুর উদ্দিন (৫৭)। এ সময় তার সঙ্গে মাছ ধরতে আরো ৩০/৪০ জন সেখানে গিয়েছিলেন। বজ্রপাতে সেখানে থাকা চার জন আহত হয়েছেন।
কানাইঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহাঙ্গীর হোসেন সরদার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, বিকেল ৪টার দিকে দুই জনের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করা হয়েছে।
এদিকে, গোয়াইনঘাটের ভিত্রিখেল হাওর গ্রামের রাজ্জাক মিয়ার স্ত্রী রুকসানা বেগম (৪৭) বজ্রপাতে অচেতন হয়ে পড়েন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়ার পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। একই সময় বজ্রপাতে আহত হন নিয়াগোল গ্রামের আব্দুল করিমের ছেলে ইসমাইল আলী (১৮)। তিনি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রয়েছেন।
কোম্পানীগঞ্জে হাওর থেকে হাঁস আনতে গিয়ে বজ্রপাতে মো. নেজামুল হক (২১) নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। তিনি উপজেলার ইছাকলস ইউনিয়নের পুটামারা গ্রামের ছুরফান মিয়ার ছেলে। কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বদিউজ্জামান এ তথ্য জানিয়েছেন।
নেজামুল হকের বড় ভাই এমদাদুল হক সুমন বলেন, ‘আমাদের নিজস্ব হাঁসের খামার রয়েছে। বজ্রপাতের সময় আমরা দুই জন হাঁস আনতে বাড়ির পাশে হাওরে যাই। তখন বজ্রপাত হলে নেজামুল পড়ে যায়। শরীরে হাত দিতেই বুঝতে পারি, তার শরীর পুড়ে গেছে। পরে আমার চিৎকার শুনে পরিবারের লোকজন গিয়ে লাশ উদ্ধার করে সিলেটের ওসমানী হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানকার চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।’
স্থানীয় ইউপি সদস্য কালাম হোসেন মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, বাড়ির সামনে চারা খেতে দ্বীন ইসলাম লাকড়ি শুকাতে দিয়েছিলেন। দুপুরে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন দেখে লাকড়িগুলো আনতে গেলে আকষ্মিক বজ্রাঘাতে তিনি ঘটনাস্থলেই মারা যান।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মফিজুর রহমান জানিয়েছেন, বজ্রপাতে নিহত কৃষককে আর্থিক সহায়তা করা হবে।