ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাদ আলী
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাদ আলী বলেছেন, “ঢাকা মহানগরে সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে সহযোগিতা করতে নগরবাসীকে অনুরোধ করছি। ট্রাফিক পুলিশ সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে কাজ করছে।”
সোমবার( ৯ ডিসেম্বর) সকালে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে পুলিশের কর্মকাণ্ডের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, “নতুনভাবে নাগরিকদের সেবা দিতে কাজ শুরু করেছে পুলিশ। ছিনতাই প্রতিরোধের জন্য গোয়েন্দা পুলিশকে সক্রিয় করা হয়েছে, যাতে নগরবাসী এসব অপরাধের মুখোমুখি না হয়। পোশাকধারী পুলিশের সঙ্গে গোয়েন্দারাও কাজ করছেন।”
ডিএমপি কমিশনার বলেন, “ঢাকাবাসীর সহযোগিতা ছাড়া আমাদের কিছু করার নেই। চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে যদি সমাজ থেকে প্রতিবাদ গড়ে তোলা না হয়, তাহলে চাঁদা বন্ধ করা সম্ভব না। আপনারা চাঁদা দেবেন না। যারা চাঁদা নিতে আসেন, তারা কীভাবে চাঁদা নেন, সেটা আমরা দেখবো। চাঁদাবাজির জন্য নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ বিষয়ে আমি কাজ করছি, দ্রুতই আপনারা দেখতে পারবেন।”
তিনি বলেন, “জুলাই-আগস্টের ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজধানীসহ সারা দেশে মিথ্যা মামলা দিয়ে নিরপরাধ মানুষকে হয়রানির ঘটনা বেড়েছে।”
যেসব লোকের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা হচ্ছে, তদন্ত না হওয়া পর্যন্ত তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হবে না, জানিয়ে শেখ মো. সাজ্জাদ আলী বলেন, “গণঅভ্যুত্থানের পরে অধিকাংশ মামলা হয়েছে কোর্টের নির্দেশে। এখানে আসামির সংখ্যা ছিল ২০০ প্লাস। দেখা যাচ্ছে, এসব মামলায় অনেকে জড়িত ছিল না, গুটিকয়েক লোক জড়িত ছিল। কিন্তু, এখন যেটা ঘটছে, ওই মামলার বাদী ১০০ লোকের কাছে গিয়ে টাকা চাচ্ছে। এসব আসামির ভয়ের কিছু নেই, আমি তাদের এরেস্ট করব না। তদন্তে যাদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যাবে, আমরা শুধু তাদের গ্রেপ্তার করব। বাদী উদ্দেশ্যমূলকভাবে ২০০ লোককে আসামি করেছেন পরবর্তীতে উনি চাঁদাবাজি বাণিজ্য করবেন বলে।”
এসব মামলার বাদী ছাড়াও পুলিশেরও কিছু লোক কাজ করছে, জানিয়ে কমিশনার বলেন, “আমার সব লোকও যে ভালো, তা বলব না। আমার কাছে যাদের বিরুদ্ধে রিপোর্ট এসেছে, আমি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি। আমি গতকাল অলরেডি একজনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি, যিনি আমার লোক, এই কাজে লিপ্ত ছিল।”
ঢাকার ট্রাফিক ব্যবস্থায় জোর দেওয়া হয়েছে, জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, “বিশৃঙ্খল অবস্থায় আছে ঢাকার ট্রাফিক ব্যবস্থা। ট্রাফিকে শৃঙ্খলা ফেরাতে ইতোমধ্যে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এজন্য নগরবাসীর সহযোগিতা প্রয়োজন।”
এজন্য স্কুল-কলেজের পাশে অভিভাবকদের বাসা ভাড়া নেয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন শেখ মো. সাজ্জাত আলী। পাশাপাশি ব্যক্তিগত গাড়ির ব্যবহার কমানোর অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।
শেখ মো. সাজ্জাদ আলী বলেন, “বিগত সরকার অটোরিকশার অনুমতি দেওয়ার কারণেই বাড়ছে এর সংখ্যা। অচিরেই এটি কমানো না গেলে ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখে পড়তে হবে নগরবাসীকে। এ বিষয়ে সরকারের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করেছি।”