ঢাকা সোমবার ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ || ২০শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি
প্রচ্ছদ খেলাধুলা প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে সাফল্যের শিখরে রিপা

প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে সাফল্যের শিখরে রিপা

সাফ চ্যাম্পিয়ন

বাবা ও বড় ভাইয়ের সঙ্গে শাহেদা আক্তার রিপা। ফাইল ফটো

কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রামের মেয়ে শাহেদা আক্তার রিপা। একসময় যার নাম কেবলমাত্র স্থানীয় মানুষদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল, আজ সেই নাম গোটা দেশকে আলোড়িত করেছে। নারী ফুটবলে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ জিতে ক্রীড়াজগতে নতুন তারকা হয়ে জন্ম নিয়েছেন তিনি। দারিদ্র্য, প্রতিবন্ধকতা এবং সমাজের কঠিন বাধা পেরিয়ে রিপা আজ বাংলাদেশের গর্বে পরিণত হয়েছেন।

রিপার শৈশব কেটেছে দারিদ্রতায়। পরিবারের অর্থনৈতিক অবস্থা তেমন ভালো ছিল না কখনোই। তবুও মা-বাবা, বড় ভাই কখনোই রিপাকে থেমে যেতে দেননি। খেলার প্রতি অগাধ ভালোবাসা ও অদম্য ইচ্ছাশক্তির কারণে রিপা এগিয়ে গেছেন। গ্রামের রীতি- নীতির কারণে মেয়ে হয়ে ফুটবল খেলা চালিয়ে যাওয়ায় ছোটবেলা থেকেই তাকে অনেক বাধার সম্মুখীন হতে হয়েছে, কিন্তু কোনো কিছুই তাকে দমাতে পারেনি।

শুক্রবার (১ নভেম্বর) রিপার গ্রামের বাড়ি উখিয়া উপজেলার সোনাই ছড়ি গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, ঘরের সামনে বড় ফুটবল মাঠ। সেখান থেকেই নিজেকে প্রস্তত করে আজ রিপা নারী ফুটবল তারকা। প্রতিবেশীরা মাঠের দিকে আঙুল উঁচিয়ে বললেন, এই মাঠেই আমাদের রিপা খেলতো, খেলার সঙ্গী হিসেবে কাউকে না পেলেও একা একা চর্চা করত।

রিপার বাবা জালাল আহমদ বলেন, ‘রিপার সাফল্যে শুধু পরিবারের সদস্যরাই নয়, প্রতিবেশী ও এলাকার মানুষরাও আনন্দিত। তার সাফল্যের পেছনে সবচেয়ে বড় অবদান শিক্ষক সানা উল্লাহ ও শামশুল আলম সোহাগের। প্রতিবেশীদের দোয়া, আন্তরিক ভালোবাসা ও উৎসাহ রিপাকে আজ এতদূর পর্যন্ত যেতে সহযোগিতা করেছে।’

প্রতিবেশী মোহাম্মদ সৌরভ হোসাইন বলেন, ‌“আমাদের গ্রামের মেয়ে দেশের হয়ে নেপালে খেলতে গেল, তাও আবার সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের মতো বড় আসরে। এটি গ্রামবাসীর জন্য সবচেয়ে বড় সুখবর। প্রথম প্রথম সে যখন মাঠে খেলতে যেত অনেকেই অনেক কথা বলতেন। ‘মেয়ে কেন ছেলেদের খেলা খেলবে, ছেলেদের মতো দৌঁড়াবে, হেনতেন।’ এসব তোয়াক্কা না করে রিপা নিজেকে প্রমাণ করার চ্যালেঞ্জ নিয়েছিল। আজ সে সফল। গ্রামের মানুষরা নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে রিপাকে উৎসাহ দিচ্ছে। রিপার খেলা চললে গ্রামের সবাই হৈ-হুল্লোড় করে খেলা দেখতে বসে।”

প্রতিবেশী ইউসুফ জালাল বলেন, ‘রিপার বাড়ির পাশেই খেলার মাঠ। পড়ার সময় পড়া আর খেলার সময় মাঠ দাপিয়ে বেড়াত মেয়েটি। আজ গ্রামবাসীর মুখ উজ্জ্বল করেছে রিপা। তিনি এখন আমাদের দেশের গর্ব। আমরা সবাই তার জন্য দোয়া করছি।’

কক্সবাজার জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাবেক সাধারণ সম্পাদক অনুপ বড়ুয়া অপু বলেন, ‘রিপার এই অর্জন বাংলাদেশের ক্রীড়াজগতে নতুন দ্বার উন্মোচন করেছে। সাফল্যের এই গল্পটি আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় ইচ্ছাশক্তি ও পরিশ্রমের মাধ্যমে মানুষ যেকোনো বাধাকে জয় করতে পারে। অনেকে তাকে দেখে অনুপ্রাণিত হবে, বিশেষ করে যারা দারিদ্র্য বা সমাজের নানা বাধার কারণে নিজেদের স্বপ্নকে দূরে সরিয়ে রেখেছে। রিফা তাদের জন্য এক জীবন্ত উদাহরণ।’

0 FacebookTwitterPinterestEmail

অনুসন্ধান

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম

ফেসবুকে আমরা

সম্পাদক ও প্রকাশক

মুহাম্মদ মনিরুজ্জামান ভূঁইয়া (তুহিন)

নির্বাহী সম্পাদক

সোনিয়া রহমান

অফিসঃ

৪৯ মতিঝিল (৮ম তলা), শাপলা ভবন, শাপলা চত্বর, ঢাকা - ১০০০

ই-মেইলঃ

rightwayciezs@gmail.com

টেলিফোনঃ

+৮৮ ০১৭১২-৭৭৭ ৩৬৩

মার্কেটিংঃ

+৮৮ ০১৯৪৮- ৯০০ ৯১১

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি। সকল স্বত্ব rightwaynews24.com কর্তৃক সংরক্ষিত