কোটা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে রাজধানীজুড়ে সৃষ্ট সহিংসতায় গত কয়েকদিনের আতঙ্ক আর অস্বস্তি কাটিয়ে স্বাভাবিক রূপে ফিরছে জনজীবন। টানা পাঁচদিন থমকে থাকার পর বুধবার প্রথম কর্মদিবসে অনেকটাই স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে রাজধানীসহ সারা দেশ। এদিন অফিস ছুটির সময়ে বিকেলে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কে যানজটেরও সৃষ্টি হয়। আর শেষ বিকেলের বৃষ্টিতে কিছুক্ষণের জন্য দুর্ভোগে পড়েন নগরবাসী।
বুধবার বেলা ১১টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত সরকারি-বেসরকারি অফিস-আদালত খুলেছে। সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল থাকায় মানুষ স্বাচ্ছন্দ্যে চলা ফেরা করেছে। তবে, গণপরিবহনের সংখ্যা কম থাকায় কিছুটা দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে নগরবাসীকে।
সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসে বৃহস্পতিবারও বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত চালু থাকবে সরকারি বেসরকারি অফিস। অন্যদিকে, কারফিউ শিথিল থাকবে সকাল ১০টা থেকে ৫টা পর্যন্ত।
এদিকে, যে কোনও ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে সড়কে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যাপক উপস্থিতি। সড়ক-মহাসড়কে বেড়েছে যানবাহনের চলাচল।
বুধবার রাজধানীর সড়কগুলোতে দেখা যায়, ঢাকার চিরচেনা ট্রাফিক জ্যাম। অলিগলিসহ বিভিন্ন সড়কে মানুষের স্বাভাবিক উপস্থিতি দেখা গেছে, গত কয়েকদিনের তুলনায় অনেক বেশি। টানা কয়েক দিনের অস্বস্তিকর পরিস্থিতি কাটিয়ে ঘরের বাইরে বেরিয়ে স্বস্তি ফিরে পেয়ে খুশি রাজধানীবাসী। অফিস খোলার পাশাপাশি যান চলাচল অনেকটা স্বাভাবিক হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেন তারা।
বাস কম থাকায় প্রধান সড়কেও দাপিয়ে বেড়িয়েছে ব্যাটারিচালিত রিকশা। সড়কে ছিলো ব্যক্তিগত গাড়ির আর রিকশার আধিক্য। সুযোগ বুঝে ভাড়া বেশি হাঁকিয়েছেন তারা।
অফিস শেষ করে পল্টন থেকে নতুন বাজারের উদ্দেশ্য যেতে বাসের অপেক্ষায় দাঁড়িয়েছিলেন একটি বেসরকারি ব্যাংকে কর্মরত আব্বাস হোসেন। তিনি জানান, অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে রয়েছেন, বাসে উঠতে পারছেন না। যে বাস আসছে তাতে পা ফেলার জায়গা নেই। সিএনজি ভাড়া করবেন তারও উপায় নেই। দ্বিগুণ ভাড়া আদায় করছেন। বৃহস্পতিবারও এমন পরিস্থিতি হবে আশঙ্কা প্রকাশ করে তিনি ধারণা করেন, রোববার থেকে সবকিছু স্বাভাবিক হতে পারে।
এদিকে, টাকা পাঁচদিন পর অফিস খোলার প্রথম দিন সকাল ৯টা থেকেই সড়কে বাড়তে থাকে মানুষের উপস্থিতি। সরকারি-বেসরকারি অফিস খোলায় জীবন-জীবিকার টানে ঘরবন্দি জীবন ছেড়ে কর্মস্থলে ছুটতে থাকেন অনেকেই। সেই সঙ্গে বাড়ে যানবাহনের সংখ্যাও। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অন্যসব
স্বাভাবিক দিনের মতোই স্বরূপে ফিরতে শুরু করে রাজধানী। বিকেলে কারফিউয়ের সময় পেরিয়ে গেলেও শেষ মুহূর্তে বাড়ি ফেরার তাড়ায় সড়কে ছিল সেই পুরনো যানজট।