বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার আহ্বান জানিয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, এবারের পূজা যেন নতুন বাংলাদেশের পূজা হয়। বাংলাদেশে সংখ্যালঘু-সংখ্যাগরিষ্ঠ বলে কিছু থাকতে পারে না। এখানে আমরা সবাই এক পরিবারের মানুষ।
সোমবার টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসকের সভাকক্ষে শারদীয় দুর্গাপূজা ২০২৪ উদযাপন বিষয়ক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
সামাজিকভাবে সচেতনতা বৃদ্ধির আহ্বান জানিয়ে উপদেষ্টা আরও বলেছেন, আমরা ঈদে আনন্দ করবো পূজায় ভয়ে থাকবো এটা হয় না। পূজায় কেন ভয়ে থাকতে হবে? পুলিশ-আনসার দিয়ে পাহাড়া দিয়ে পূজাটাকে আনন্দময় করবো এটা তো হতে পারে না। পূজায় হিন্দু-মুসলিম সবাই মিলে আমরা আনন্দ করতে চাই। সেজন্য সামাজিকভাবে পরিস্থিতি তৈরি করতে হবে।
উপদেষ্টা আরও বলেন, দীর্ঘদিন মানুষের মধ্যে বৈষম্য ও বঞ্চনা এবং পুঞ্জিভূত ক্ষোভের ফলে আন্দোলন তুঙ্গে উঠেছিল এবং এ আন্দোলন ছিল ছাত্র-জনতার সর্বোপরি সর্বোস্তরের মানুষের আন্দোলন। এ আন্দোলনে সহস্রাধিক মানুষের প্রাণহানি হয় যাদের অধিকাংশই ছাত্র। কাজেই এ আন্দোলনের ফলে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার শুধু দায়িত্ব নয়, বরং কর্তব্য বলে মনে করছে।
বাংলাদেশকে সম্প্রীতির দেশ উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, বিভিন্ন সময় মুসলমান পূজা দেখতে যায়, আবার সনাতন ধর্মাবলাম্বীরাও ঈদের আনন্দ উদযাপন করতে আসে। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের নির্বিঘ্নে পূজা উদযাপন করতে সেনাবাহিনীসহ স্থানীয় প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী একযোগে সর্বোচ্চভাবে কাজ করে যাচ্ছে দেখে এ সময় উপদেষ্টা সন্তোষ প্রকাশ করেন।
টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক শরীফা হকের সভাপতিত্বে এবং অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সার্বিক জিয়াউল ইসলাম চৌধুরীর সঞ্চালনায় আরো উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার মো. সাইফুল ইসলাম সানতু, জেলা পূজা উদযাপন সমিতির সভাপতি চিত্ত রঞ্জণ সরকার, সেক্রেটারি ঝন্টু কুমার সরকার, উপ-পরিচালক স্থানীয় সরকার, সিভিল সার্জন, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, সেনা বাহিনীর কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন শাওনসহ সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
পরে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা দেলদুয়ার উপজেলার বিভিন্ন পূজা মণ্ডপ পরিদর্শন করেন। এ সময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (উন্নয়ন ও মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা) সঞ্জয় কুমার মহন্ত, ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোস্তফা আবদুল্লাহ আল-নূর, অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. সোহেব খাঁন, দেলদুয়ার উপজেলা শাখা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি এস প্রতাপ মুকুল, সাধারণ সম্পাদক পলাশসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।