‘বাংলাদেশকে দ্বিতীয়বার ব্যাটিং করতে দিলে ভারত আজই জিতে যেতো’-মজার ছলে ভারতীয় এক ক্রীড়াসাংবাদিক এমনটাই বলছিলেন। আসলেই তো তাই। একটি ওয়ানডে ম্যাচে প্রতি ইনিংসের জন্য ৫০ ওভার বরাদ্ধ। টেস্টে এর কোনো সীমাবদ্ধতা নেই। কিন্তু ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশ সেই ওয়ানডে ইনিংসের কোটা-ই পূরণ করতে পারেনি। মিনিটের হিসেবে মাত্র ২১০ মিনিট!
চীপকের এমএ চিদাম্বরম স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় দিন শেষে ব্যাকফুটে বাংলাদেশ। মাথায় ৩০৮ রানের লিডের বোঝা। ২২৭ রানে এগিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে ভারত। দিন শেষ করে ৩ উইকেটে ৮১ রান তুলে। শুভমান গিল ৩৩ ও ঋষভ পন্ত ১২ রানে অপরজিত আছেন।
ফলোঅনের সুযোগ পেয়েও বাংলাদেশকে দ্বিতীয়বার ব্যাটিংয়ে পাঠাননি রোহিত শর্মা। ভারতের দেওয়া ৩৩৯ রানের জবাবে খেলতে নেমে প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ থামে মাত্র ১৪৯ রানে। ভারতের বিপক্ষে টেস্টে এটি পঞ্চম সর্বনিম্ন। তবে প্রথম ইনিংসে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন। সবশেষ সফরে ১০৬ রানে অলআউট হয়েছিল।
ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম ওভারে উইকেট হারায় বাংলাদেশ। সাদমান ইসলামকে (২) বোকা বানিয়ে প্রথম ওভারের শেষ বলে বোল্ড করে সাজঘরে পাঠান। প্রথম ৫ বলে আউটসুইং পেয়ে সাদমান ভেবেছিলেন শেষটিও এমন হবে। কিন্তু না, বল ছেড়ে দিতেই ভেঙ্গে দেয় উইকেট। শুরু হয় উইকেটের মিছিল।
একে একে সাজঘরে ফেরেন জাকির হাসান (৩), মুমিনুল হক (০), নাজমুল হোসেন শান্ত (২) ও মুশফিকুর রহিম (৮)। জাকিরের পরেই ক্রিজে এসে মুমিনুল ফেরেন প্রথম বলে! ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলে মাত্র ৪০ রানে।
এরপর সাকিব আল হাসান এগোতে থাকেন লিটন দাসকে সঙ্গে নিয়ে। দুজনের ব্যাটে আসে বাংলাদেশের ইনিংসের একমাত্র ফিফটির জুটি। নিখুঁত ব্যাটিংয়ের আভাস দিলেও ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারেননি। স্বভাবচরিত থিতু হওয়ার পর অহেতুক শটে উইকেট বিলিয়ে দিয়েছেন লিটন। ২২ রানে সুইপ করতে গিয়ে ধরা পড়েন ফর্মে থাকা এই ব্যাটার। ভেঙ্গে যায় ৫১ রানের জুটি।
সাকিবকে ব্যাট হাতে সাবলীল দেখা গেলেও লিটনের পর তিনি বেশিদূর এগোতে পারেননি। সুইপ করতে গিয়ে তিনিও কাটা পড়েন। বল ব্যাট থেকে বুট হয়ে উইকেটরক্ষকের হাতে। সাকিবের ব্যাট থেকে আসে সর্বোচ্চ ৩২ রান। সাকিবের আউটের পর মেহেদি হাসান মিরাজসহ টেলএন্ডারেদের ব্যাটে চড়ে কোনো মতে দেড়’শ এর কাছে গিয়ে থামে বাংলাদেশের রান। মিরাজ ২৭ রান করেন। আর তাসকিন আহমেদ ও নাহিদ রানার ব্যাট থেকে আসে সমান ১১ রান।
বুমরাহ একাই নেন ৪ উইকেট। এদিন তিনি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ৪০০ উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করেন। এ ছাড়া মোহাম্মদ সিরাজ, আকাশদীপ ও রবীন্দ্র জাদেজা নেন সমান দুটি করে উইকেট।
বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ৫ উইকেট নেন হাসান। প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ভারতের মাটিতে এমন কীর্তি গড়লেও ব্যাটারদের ব্যর্থতায় আনন্দ মাটি হওয়ার পথে। ৩ উইকেট নেন তাসকিন আহমেদ। ১টি করে উইকেট নেন নাহিদ রানা-মিরাজ।