প্রতীকী ছবি
প্রতিবাদ করায় বরখাস্ত, তিন মাস কাজ না পেয়ে হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েন টলিউডের হেয়ার স্টাইলিস্ট তনুশ্রী দাস। গতকাল এসব অভিযোগ জানিয়ে, নিজের শরীরে কেরোসিন ঢেলে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন তিনি। তবে শেষ মুহূর্তে তাকে বাঁচায় তার কন্যা। বর্তমানে কলকাতার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তনুশ্রী।
ভারতীয় একটি গণমাধ্যম জানিয়েছে, তিন মাস আগে হেয়ার ড্রেসার গিল্ড থেকে বরখাস্ত করা হয় হেয়ার স্টাইলিস্ট তনুশ্রী দাসকে। যার ফলে সংসার চালাতে গিয়ে তাকে প্রচুর ঋণ করতে হয়। নির্দিষ্ট সময়ের পর তিনি কাজের অনুমতি পান। কিন্তু নিজে বাইরের কাজ জোগাড় করতে পারবেন না, এই নির্দেশ জানায় গিল্ড।
এ বিষয়ে তনুশ্রী দাস বলেন, ‘আমার হাত থেকে একের পর এক কাজ কেড়ে নেওয়া হতে থাকে। রোববার মৈনাক ভৌমিকের আগামী সিনেমার লুক সেট। তিনি এই কাজটি জোগাড় করেছিলেন। শনিবার প্রোডাকশন ম্যানেজার ফোন করে জানান, গিল্ড থেকে ফোনে বলা হয়েছে তাকে যেন কাজটি না দেওয়া হয়। এরপর ফেডারেশনের সম্পাদকের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তিনি জানান, গিল্ড ফোন করে তাকে অনুমতি না দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। পর পর তিনবার একইভাবে কাজ হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়ি। বাড়িতে অসুস্থ স্বামী, মেয়ের পড়াশোনার খরচ রয়েছে। মাত্র এক শিফটে কাজ করে দেনা শোধ, সংসার চালানো কোনোমতেই সম্ভব নয়। সেই হতাশা থেকেই এই পদক্ষেপ।’
বিষয়টি নিয়ে ক্ষীপ্ত হেয়ার ড্রেসার গিল্ডের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক হেমা মুন্সী। তিনি বলেন, ‘বিষয়টি একাধিকবার উত্থাপন করেছি। প্রত্যেককে কাজ করতে দেওয়া হোক, দাবি জানিয়েছি। তারপরও এই ঘটনা চলতে থাকবে ভাবতে পারিনি। সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব সামলেছি। কখনো এমন আচরণকে প্রশ্রয় দিইনি। এভাবে মানসিক নির্যাতন চলতে থাকলে বাকি সদস্যদের বলব সংগঠনের বিরুদ্ধে পথে নামতে।’
তনুশ্রী দাসের আত্মহত্যার চেষ্টার খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে যান পরিচালক সুদেষ্ণা রায়, সৃজিত মুখার্জি, অভিনেত্রী সুদীপ্তা চক্রবর্তী, চৈতি ঘোষাল, মানালি দে, পরমব্রত চ্যাটার্জি প্রমুখ।
আরজি কর-কাণ্ডের পাশাপাশি টলিউড নিয়ে দারুণ সরব সুদীপ্তা চক্রবর্তী। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ওই কেশসজ্জা শিল্পীর কথা অনুযায়ী, ওকে অকারণে ১ জুলাই থেকে তিন মাস সাসপেন্ড করেছিল ওদের গিল্ড। তারপর কাজে ফিরলেও বাইরের কাজ করতে পারছিলেন না। সেই অভিযোগ আমার কাছে করেন। রোববার মৈনাকের কাজটি হাতছাড়া হওয়ার পর সম্ভবত নিজেকে আর ধরে রাখতে পারেননি তিনি।’
হুঁশিয়ারি দিয়ে সুদীপ্তা বলেন— ‘এই অন্যায় মানতে পারছি না। এর শেষ দেখে ছাড়ব।’