ক্ষমতাসীন দলের রাজনীতি করে বিপুল অবৈধ সম্পদের মালিক বনে গেছেন মুন্সীগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মহিউদ্দিন আহম্মেদ ও তার স্ত্রী সোহানা তাহমিনা। ক্ষমতার অপব্যবহার করে হয়েছেন চারটি রিয়েল এস্টেট কোম্পানির মালিক।
মুন্সীগঞ্জ জেলার পুলিশ প্রশাসন থেকে শুরু করে সবকিছুই নিয়ন্ত্রণ করতেন মহিউদ্দিন ও তার স্ত্রী। তদবির বাণিজ্য, কমিশন বাণিজ্য, চাঁদাবাজি, জমি দখলসহ নানা অবৈধ পথে অর্থ উপার্জন করেছেন তারা। মহিউদ্দিন আহম্মেদ নামে-বেনামে সম্পদ গড়তে স্ত্রীকে করেছেন জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। স্ত্রীর নামে ল্যান্ডক্রুজার গাড়ি, ঢাকায় বিলাসবহুল ফ্ল্যাটসহ গড়েছেন অনেক কিছুই।
মহিউদ্দিন দম্পতির শেল্টারে মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার চেয়ারম্যান হয়েছেন তারই ঘনিষ্ঠ আনিসউজ্জামান আনিস। আনিসেরও আছে বিপুল অবৈধ সম্পদ।
সম্প্রতি মুন্সীগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মহিউদ্দিন আহম্মেদ, তার স্ত্রী সোহানা তাহমিনা ও সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারমানসহ পাঁচজনের সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে গোয়েন্দা রিপোর্টে এসব চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে। তাদের বিচারের মুখোমুখি করতে অভিযোগ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
সোমবার (৭ অক্টোবর) দুদকের ডেপুটি ডিরেক্টর (জনসংযোগ) আকতারুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
দুদক জানিয়েছে, মুন্সীগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মহিউদ্দিন আহম্মেদ, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সোহানা তাহমিনা, মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আনিসউজ্জামান আনিস, মীর কাদিম পৌরসভার সাবেক মেয়র মো. শহিদুল ইসলাম শাহিন ও মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আফসার উদ্দিন ভূঁইয়া অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন।
মহিউদ্দিন আহম্মেদ চারটি রিয়েল এস্টেট কোম্পানির মালিক। তার স্ত্রী সোহানা তাহমিনা ক্ষমতার অপব্যবহার করে চাঁদাবাজি, জমিদখল ও অন্যান্যভাবে অবৈধভাবে অর্থ উপার্জন করেন। তাদের অবৈধ সম্পদের মধ্যে আছে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের ইকবাল রোড, এ ব্লক, বাসা নং-১১/১ (ফ্ল্যাট নং-৭/এ) ঠিকানায় ১৭৪.৯০ স্কয়ার ফুটের ফ্ল্যাট। এর দাম ৭৫ লাখ টাকা। আছে ১৫ লাখ টাকার একটি ল্যান্ডক্রুজার টয়োটা গাড়ি। তাদের আরও অনেক সম্পদ নামে-বেনামে রয়েছে।
সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আনিসুজ্জামান আনিসের আছে মুন্সীগঞ্জ শহরে ৩ হাজার ৯৬০ বর্গফুট বিশিষ্ট ৫ তলা ভবন ‘মুন্সীগঞ্জ টাওয়ার’ এবং কোর্টগাঁও মৌজায় ২ তলা ভবন।
আফসার উদ্দিন ভূইয়ার বিরুদ্ধে সোয়া ৪ কোটি টাকার সেতু নির্মাণে অনিয়মের তথ্য পাওয়া গেছে। দুদকের অনুসন্ধানে সেতু নির্মাণে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের সঙ্গে আফসার উদ্দিন ভূইয়ার সংশ্লিষ্টতার সত্যতা পাওয়া গেছে।