তানিনথারি অঞ্চলের ঘূর্ণায়মান পাহাড়জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা চেকপয়েন্টে অবস্থানরত বিদ্রোহী যোদ্ধারা মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে থাকা কাছাকাছি একটি শহরের দিকে যাত্রা করা গাড়ি এবং ট্রাকগুলো তল্লাশি করছে। ২০২১ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের পর যেসব গোষ্ঠী সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করছে তারা সবাই এই কাজটিই করে থাকে। তবে এই বিদ্রোহীদের যেটি আলাদা করেছে তা হচ্ছে তাদের বিশ্বাস।
এরা স্বল্প পরিচিত ‘মুসলিম কোম্পানি’ এর সদস্য, যারা খ্রিস্টান ও বৌদ্ধ-অধ্যুষিত সশস্ত্র গোষ্ঠী – কারেন ন্যাশনাল ইউনিয়ন (কেএনইউ) এর অংশ হিসাবে মিয়ানমারে গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রামে যোগ দিয়েছে। আনুষ্ঠানিকভাবে কেএনইউ-তে এর নাম ব্রিগেড চার-এর তৃতীয় কোম্পানি। মুসলিম কোম্পানির ১৩০ জন সেনা সামরিক শাসকদের উৎখাত করার জন্য হাজার হাজার যোদ্ধার একটি ভগ্নাংশ মাত্র।
মুসলিম কোম্পানির নেতা ৪৭ বছর বয়সী মোহাম্মদ আইশার আল-জাজিরাকে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে দীর্ঘকাল ধরে লড়াই করা সশস্ত্র প্রতিরোধ আন্দোলনের কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘কিছু এলাকায় তাদের নিজস্ব রাষ্ট্র থাকা জাতিগতদের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করা হয়েছে।’
তিনি জানান, কোনো একটি গোষ্ঠীই ভূমিতে আধিপত্য বিস্তার করে না এবং এর পাশাপাশি সামরিক বাহিনীর দমন-পীড়ন সব গোষ্ঠীকে প্রভাবিত করে।
আইশার বলেন, ‘যতদিন সামরিক বাহিনী থাকবে, ততদিন মুসলমান এবং অন্য সবাই নিপীড়িত হবে।’
মুসলিম কোম্পানির নেতা আশা করেন যে সামরিক বিরোধী শক্তির মধ্যে বৈচিত্র্যের গ্রহণযোগ্যতা সাংস্কৃতিক এবং আঞ্চলিক উত্তেজনা কমাতে সাহায্য করবে, যা এর আগে মিয়ানমারে সংঘাতের কারণ হয়েছিল।
মুসলিম কোম্পানির ঘাঁটি মিয়ানমারের কারেন রাজ্যে। তাদের প্রধান শিবিরে অবস্থানরত নারী যোদ্ধারা মাথায় হিজাব এবং লম্বা জামা পরেন। শিবিরে তৈরি করা মসজিদ থেকে কুরআন তিলাওয়াতের শব্দ শোনা যায়। তাদের মসজিদে বিছানো রয়েছে মাদুর। এই যোদ্ধারা রমজানে রোজা রাখেন এবং প্রতিদিন তাদের নামাজে অংশ নেন।