দুর্গাপূজা উপলক্ষে ভারতের বিশেষ অনুরোধে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে এক সভায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।
উপদেষ্টা বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় স্বাধীনভাবে এটা (রপ্তানির অনুমোদন) দিয়েছে। তারা একটা অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে দিয়েছেন। দুর্গাপূজা উপলক্ষে ভারতের বিশেষ অনুরোধ ছিল। সে অনুযায়ী তারা করেছেন। তাদের তো আমি জোর করতে পারি না।
তিন হাজার টন ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন বিষয়ে মৎস্য উপদেষ্টা বলেন, যেটা গতকাল বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন দিয়েছে সেটা ভারতের মৎস্য ব্যবসায়ী বাংলাদেশের মৎস্য ব্যবসায়ীদের অনুরোধে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এ অনুমোদন দিয়েছে।
তিনি বলেন, আপনারা বলছেন ইলিশের দাম ইতোমধ্যেই বেড়ে গেছে, সেখানে আপনারা একটা ভূমিকা রাখতে পারেন। মাছটি এখন যায়নি কাগজে আছে। এর প্রভাবে যদি বাড়ে, সেটা উচিত হবে না। আমাদের এ বছর ইলিশের উৎপাদন পাঁচ লাখ ৩০ হাজার টন। এর মধ্যে থেকে মাত্র তিন হাজার টন অনুমতি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু গত বছর তিন হাজার টনের বেশি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তবে, সে অনুযায়ী রপ্তানি হয়নি। মাত্র এক হাজার টন দেওয়া হয়েছিল।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে কী রপ্তানি বন্ধ রাখার বিষয়ে বলবেন— এমন প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, আমি প্রথমেই বলেছি, আগে দেশের মানুষ খাবে পরে রপ্তানি হবে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় স্বাধীনভাবে অনুমোদন দিয়েছে এবং একটা বিশেষ অনুরোধে দিয়েছেন। ভারতে দুর্গাপূজা উপলক্ষে বিশেষ অনুরোধ ছিল। সে বিষয়ে তো আমি তাদের কিছু বলতে পারি না।
দাম বাড়লে রপ্তানি নিরুৎসাহিত করবেন কি না— এমন প্রশ্নে উপদেষ্টা বলেন, যদি দাম বাড়ে সেই দাম বাড়ার বিষয়ে অবশ্যই আমাদের ব্যবস্থা নিতে হবে। দামের বিষয়টি আমরা প্রতিনিয়তই মনিটরিং করছি, মজুত হয় কিনা দেখা হচ্ছে। সরকার যে কোনও বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতেই পারে। আমরা আমাদের কাজে যদি অবহেলা করে থাকি, তাতে দেশের ক্ষতি, জনগণের ক্ষতি হলে সেই দায় আমরা নেব।
বাংলাদেশের ইলিশ রপ্তানি করবেন কি না বা বন্ধের কোনও ব্যবস্থা নেবেন কি না— এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রপ্তানি বন্ধের দায়িত্ব তো আমার না। আমি আহ্বান জানাতে পারি কিন্তু বন্ধ করতে পারি না। আমি তো আহ্বান আগেই জানিয়েছি। এখন তারা বলছে দুর্গাপূজা উপলক্ষে বিশেষ অনুরোধে এ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। সেক্ষেত্রে আমিতো জোর করে কিছু করতে পারি না। আমরা এখনও আগের অবস্থানেই আছি। আমাদের বাংলাদেশের মানুষের কাছে যেন ইলিশের প্রাপ্যতা নিশ্চিত করতে পারি।
মাছ তো আপনার সে বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কীভাবে সিদ্ধান্ত নেয়— জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আপনারা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে গিয়ে বলুন। মাছ আমার ঠিক আছে। আরও অন্যান্য পণ্যও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় রপ্তানি করে। সেগুলো কী বাণিজ্য মন্ত্রণালয় উৎপাদন করে। কিন্তু রপ্তানি বা আমদানির সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আছে। ধর্মীয়ভাবে ইলিশের সঙ্গে পূজার কোনও সম্পর্ক নেই। উৎসবে আমরা ভালো খাবার খাই, তার অংশ হিসেবে তারা নিতে চাচ্ছে।