ফাইল ছবি
দুর্গাপূজাকে সামনে রেখে ভারতে ইলিশ রপ্তানি নিয়ে অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, বৃহত্তর স্বার্থে এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমোদনে রপ্তানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এখানে ইমোশনাল কথাবার্তার কোনও সুযোগ নেই। বিষয়টি প্রতিবেশী রাষ্ট্রের পাশাপাশি বাণিজ্যিক দিকও রয়েছে।
রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা ও রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনাকালে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ভারত আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্র, সেখানে ইলিশ রপ্তানি নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্য করার কিছু আছে বলে আমি মনে করি না। তারা আমাদের দেশে পেঁয়াজ রপ্তানি করছে, সেটা তো আমরা পাচ্ছি। তারা পেঁয়াজের ওপর শুল্ক কমিয়ে দিয়েছে।
তিনি বলেন, এতদিন ইলিশ রপ্তানি না হলেও চোরাপথে ঠিকই দেশটিতে ইলিশ পাচার হচ্ছে। এতে দেশ রপ্তানি আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছিল। রপ্তানি হওয়াতে আমাদের রপ্তানি আয় বাড়বে। অনেক বিষয় বিবেচনা করেই ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
ড. সালেহ উদ্দিন বলেন, আমরা তিন হাজার মে.টন রপ্তানির অনুমোদন দিয়েছি। যা আমাদের মোট উৎপাদনের মাত্র শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ।
আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে ভারতে ৩ হাজার টন ইলিশ মাছ রপ্তানির অনুমোদন দিয়েছে সরকার। শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) এ–সংক্রান্ত আদেশ জারি করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। আগামী ৮ অক্টোবর দুর্গাপূজা শুরু হবে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আদেশে বলা হয়েছে, দুর্গাপূজা উপলক্ষে রপ্তানিকারকদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে নির্ধারিত শর্তাবলি পূরণ সাপেক্ষে ৩ হাজার মেট্রিক টন ইলিশ মাছ রপ্তানির অনুমোদন দেওয়া হলো।
এ লক্ষ্যে রপ্তানিকারকদের ২৪ সেপ্টেম্বর দুপুর ১২টার মধ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বরাবর আবেদন করতে বলা হয়েছে। ওই তারিখের পর করা আবেদন গ্রহণযোগ্য হবে না। ভারতে ইলিশ মাছ রপ্তানির জন্য যারা আগেই আবেদন করেছেন, তাদের নতুন করে আবেদন করার প্রয়োজন নেই বলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আদেশে বলা হয়েছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, কলকাতা ফিশ ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন সম্প্রতি কলকাতায় বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশনে দুর্গাপূজা উপলক্ষে ইলিশ চেয়ে আবেদন করেছে। পরে উপহাইকমিশন বিষয়টি বাণিজ্য ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানায়।
এর আগে, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আক্তার সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেছিলেন, চলতি বছর ভারতে ইলিশ রপ্তানি করা যাবে না। তবে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকেই ভারতে ইলিশ রপ্তানির পক্ষে মত দিয়েছিলেন।
ইলিশ বাংলাদেশের ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য বা জিআই পণ্য হিসেবে ২০১৭ সাল থেকে স্বীকৃত। টানা পাঁচ বছর ধরে ভারতে ইলিশ রপ্তানি করে আসছে বাংলাদেশ। ২০১২ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত রপ্তানি বন্ধ ছিল। প্রায় প্রতিবছর দুর্গাপূজা উপলক্ষে ৫ হাজার টন ইলিশের চাহিদার কথা জানিয়ে থাকেন ভারতের ব্যবসায়ীরা।