আসন্ন বিপিএলে প্রধান উপদেষ্টার দিক নির্দেশনার বিষয় নিয়ে কথা বলছেন ক্রীড়া উপদেষ্টা
অনেক আশা দেখিয়ে ২০১২ সালে প্রথমবারের মতো যাত্রা শুরু হয়েছিল দেশের একমাত্র ফ্র্যাঞ্চাইজি ভিত্তিক টি-টোয়েন্টি প্রতিযোগিতা বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল)। কিন্তু আর্থিক কাঠামো ও পেশাদারি মডেল না থাকায় শুরু থেকেই বিতর্ককে সঙ্গী করেছে বিপিএল। যার খেসারত প্রতিটা পদে পদে দিতে হয়েছে আয়োজকদের।
জোড়াতালির বিপিএল আয়োজন করে প্রতিবারই চ্যালেঞ্জ উতরে যায়। কিন্তু বিপিএলের মান বাড়ে না। বরং প্রতিবারই জৌলুস হারায়। পরিবর্তনের যে হাওয়া বইছে বিপিএলেও তা ছড়িয়ে দিতে তৎপর বিসিবি। এজন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে আলোচনায় বসেছিলেন বিসিবি প্রধান ফারুক আহমেদ। সঙ্গে ছিলেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া।
শান্তিতে নোবেল জয়ী প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্যারিস অলিম্পিকের অন্যতম কুশিলব ছিলেন। বিখ্যাত তিন শূন্য মডেলের ভিত্তি কাজে লাগিয়ে তৈরি করা হয় প্যারিস অলিম্পিকের পরিকল্পনা। নিজেদের দেশে বিপিএলের মতো বড় আয়োজন হচ্ছে সেজন্য তার শরণাপন্ন হয়েছিল বিসিবি। ইতিবাচক দিক নির্দেশনা পেয়েছে দাবি করে বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ বলেছেন, ‘বিপিএলে এটা আমাদের এগারোতম আসর। আমরা ফ্র্যাঞ্চাইজি হিসেবে স্ট্রাগলিং, এটা ফ্যাক্ট। আমার বোর্ড সভাপতি হিসেবেও এটা স্বীকার করতে কোনো অসুবিধা নেই। এটা শুরু থাকে, যেখান থেকে আমরা উত্তোরোত্তর ভালো করতে পারি। এ ব্যাপারে প্রধান উপদেষ্টা মহাদোয় আমাদের একদিন সময় দিয়েছেন ক্রীড়া উপদেষ্টার মাধ্যমে। উই হ্যাড সাম ওয়ান্ডারফুল আইডিয়াস। ওগুলো নিয়ে আমার বিপিএল টিম কাজ করেছে। এ ব্যাপারে আজকে একটা প্রেজেন্টেশন দিয়েছি।’
ফারুক আহমেদ আরও যোগ করেন, ‘আপনারা জেনে অবাক হবেন, যেকোনো টুর্নামেন্টে কত জিনিস ইনজেক্ট করা যায়। তবে এটাও বলবো যে এই মেয়াদে হয়তো এটা প্রথম, কিন্তু অত্যন্ত চমৎকার কিছু আইডিয়া আছে যেগুলো আমরা চেষ্টা করবো ইম্পি্লমেন্ট করার। এটা এখান থেকে উত্তোরত্তর আরও উন্নতি করবে দিন দিন। তবে অবশ্যই আপনারা নতুন কিছু দেখতে পাবেন এই বিপিএলে যেটাতে দর্শক, মিডিয়া সবাই সম্পৃক্ততা অনুভব করবে টুর্নামেন্ট নিয়ে। এ ব্যাপারে দীর্ঘক্ষণ আলাপ করেছি।’
বিপিএল ও দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজ সামনে রেখে শের-ই-বাংলা স্টেডিয়াম পরিদর্শনে আসেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। স্টেডিয়াম পরিদর্শন শেষে গণমাধ্যমে বিপিএল নিয়ে বলেছেন, ‘বিসিবিই এখানে বড় পার্টটা এখানে রাখবে। আমার মনে হয়েছিল, মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা ডক্টর মুহাম্মদ ইউনূস স্যার তিনি অলিম্পিকের মতো ইভেন্টের ডিজাইনে ইনপুট দেন। তিনি এখানে আসার আগেও যে রিসেন্ট অলিম্পিক সেটার ডিজাইনে একটা বড় ইনপুট দিয়েছেন। এরকম একটা টুর্নামেন্টে তার সে অভিজ্ঞতা ও রিসোসর্টা যদি ব্যবহার না করি, তাহলে এটা আমাদের জন্য দুর্ভাগ্যজনক হবে। সে জায়গা থেকে আমি বিপিএল আয়োজক যারা আছে তাদের সঙ্গে একটু সময় দিতে স্যারকে অনুরোধ করেছিলাম।’
‘স্যার আমাদের সঙ্গে বসেছিলেন এবং প্রাথমিকভাবে কিছু আইডিয়া দিয়েছেন বিপিএলকে কীভাবে আরও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি এনে দেওয়া যায় এবং কী কী নতুনত্ব যুক্ত করা যায়। ওই আইডিয়াগুলো থেকে বিসিবি আজকে একটা প্রেজেন্টেশন দিয়েছে। স্যার তার দলের সঙ্গেও বসেছিলেন, সেখানে আরও ডিটেইল আইডিয়া দিয়েছেন। সেটাসহ বিসিবি ও স্যারের আইডিয়াগুলো কম্পাইল করার জন্য আবারও বসবো। দুয়েকের মধ্যেই স্যারের দলের সঙ্গে আমাদের আরেকটা মিটিং হবে। তার প্রেক্ষিতেই মূলত আমরা এবারের বিপিএলকে নতুন করে সাজাতে চাই। এবারের বিপিএল যেন আমাদের ঘরোয়া ক্রিকেটে একটা নতুন উদ্দীপনা নিয়ে আসে।’ – যোগ করেন তিনি।
অগোছালো আয়োজন, ফিক্সিং কেলেঙ্কারি, রাজস্ব বন্টনে অনীহা, পারিশ্রমিক নিয়ে জটিলতা, মাঠের ক্রিকেটেও নিম্নমান, অপেশাদারিত্ব আচরণ, ফ্র্যাঞ্চাইজিদের অভিজ্ঞতার ঘাটতি, বাণিজ্যিক রূপ দিতে না পারার ব্যর্থতাসহ আরও অনেক কিছু বিপিএলে জড়িয়ে আছে। নতুন করে বিপিএল ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা বিসিবির। সেই চ্যালেঞ্জ ফারুক আহমেদের বোর্ড জিততে পারেন কিনা সেটাই দেখার।