পিরোজপুরের জেলা পুলিশের সদ্য সাবেক পুলিশ সুপার মো. শফিউর রহমান ও সদর থানার ওসিসহ ৪ পুলিশের বিরুদ্ধে নির্যাতন ও অস্ত্র দিয়ে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগে মামলা দায়ের হয়েছে।
বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) শুনানি শেষে বিচারক মামলাটি তদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার অন্যান্য অভিযুক্তরা হলেন- সদর থানার সাবেক অফিসার ইন চার্জ (ওসি) আবির মোহাম্মাদ হোসেন, সাবেক ইন্সপেক্টর মো. জুলফিকার আলী, সাবেক এসআই মো. মনিরুল ইসলাম। এ ছাড়াও ৪-৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
জানা গেছে, গত ২৮ আগস্ট জেলা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. সালাউদ্দিন কুমার ওই ৪ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আদালতে মামলাটি দায়ের করেন। পরে পিরোজপুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রট মো. হেলাল উদ্দিনের আদালত ওই আদেশ প্রদান করেন।
জেলা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. সালাউদ্দিন কুমারের দায়ের করা মামলার সূত্রে জানা গেছে, গত ২০২৩ সালের ৪ নভেম্বর রাত সাড়ে ১১টার দিকে পিরোজপুর পৌরসভার উত্তর কৃষ্ণনগর বাড়ির সামনের রাস্তার উপর থেকে সাদা পোশাকে থাকা অজ্ঞাত ব্যক্তিরা তাকে আটক করেন। এরপর ওই রাতের ১২টার দিকে তাকে টহল পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন। পরের দিন সকালে পুলিশ তাকে হতাকড়া পড়িয়ে কালো কাপড় দিয়ে তার দুই চোখ বেঁধে সদর থানার ওই সময়ের অফিসার ইন চার্জ (ওসি) আবির মোহাম্মাদ হোসেন থানার গারদের সামনে বেত দিয়ে ২-৩ মিনিট ধরে পেটাতে থাকেন। এতে তিনি (কুমার) নিস্তেজ হয়ে পড়লে পরে তাকে বুট পরিহিত অবস্থায় শরীরের বিভিন্ন স্থানে পাড়ানো হয়। পরের দিন তাকে আদালতে হস্তান্তর না করে প্রচণ্ড শীতে রাতভর খালিগায়ে থানা গারদের ফ্লোরে শুইয়ে রাখা হয়। পরে ওই রাতের গভীরে তাকে হাতকড়া পড়িয়ে বাড়ির কাছের একটি কবরস্থানে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে একটি অস্ত্র ধরিয়ে দিয়ে ছবি তুলে তার বিরুদ্ধে অস্ত্র মামলা দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে জেলা পুলিশের সদ্য সাবেক পুলিশ সুপার মো. শফিউর রহমান গত ৩ সেপ্টেম্বর বদলি হলে তার সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। তবে এ বিষয়ে জানতে পিরোজপুর সদর থানার সাবেক অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবির মোহাম্মাদ হোসেন-এর সাথে ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে কথা হলে তিনি বলেন, ওই ছাত্রদল নেতাকে তিনি গ্রেপ্তার করেননি, করেছেন সেই রাতে দায়িত্বরত পুলিশ। আমার (ওসি) বিরুদ্ধে তাকে কোনো ধরনের শাররিক নির্যাতন করার অভিযোগ মিথ্যা।
মামলার বাদী ছাত্রদল নেতা সালাউদ্দিন কুমার বলেন, সাজানো অস্ত্র মামলায় ৪ মাস কারাভোগের পর জামিন হয়। আটকের সময় পুলিশের মারধরে গুরুতর অসুস্থ হয়ে বিনা চিকিৎসায় কারাগারে ভূগতে হয়েছে।