ভারী বৃষ্টি ও ফেনীর মুহুরী নদী থেকে নেমে আসা পানিতে নোয়াখালীতে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। জেলায় প্রায় ৪ লাখ মানুষ বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। বিভিন্ন গ্রামীণ সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এতে পানিবন্দি মানুষ দুর্ভোগ পোহাচ্ছে।
টানা বৃষ্টিতে জেলা শহর মাইজদীসহ আট উপজেলার বেশির ভাগ এলাকা জলাবদ্ধ হয়ে যায়। সেনবাগ, বেগমগঞ্জ, কোম্পানীগঞ্জ ও কবিরহাট উপজেলায় বেশি ক্ষতি হয়েছে। খালগুলো দখল ও পৌর এলাকায় ড্রেন পরিষ্কার না করায় জলাবদ্ধতা প্রকট আকার ধারণ করে।
জেলা আবহাওয়া অধিদপ্তরের উচ্চ পর্যবেক্ষক আরজুল ইসলাম জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় নোয়াখালীতে ১৪৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। সক্রিয় লঘুচাপ ও মৌসুমি জলবায়ুর কারণে জেলায় আরও তিন দিন ভারী বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
বন্যার পানি বেশি দিন জমে থাকার কারণে বিভিন্ন উপজেলায় বিদ্যুৎতের খুঁটি সরে যাওয়ায় লাইন বিভ্রাট হয়েছে। বিভিন্ন এলাকা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। জেলার সুবর্ণচর, কবিরহাট, সেনবাগ ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় বিদ্যুৎ সমস্যা বেশি রয়েছে।
নোয়াখালী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার জাকির হোসেন বলেন, জেলায় ৭ লাখ ৭৫ হাজার গ্রাহকের মধ্যে সাড়ে ৪ লাখ বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন। ভারী বৃষ্টিতে বিভিন্ন এলাকার লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া বেগমগঞ্জের একটি উপকেন্দ্রে পানি উঠে গেছে।
পানিতে ডুবে যাওয়ায় সড়ক ক্ষতি হচ্ছে। গ্রামীণ সড়কে বেহাল অবস্থা। জেলা সড়ক ও স্থানীয় সরকার কার্যালয় বলছে, পানি নেমে গেলে ক্ষতির পরিমাণ জানা যাবে। সেই অনুযায়ী ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়গুলো জানানো হবে।
জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান জানান, জেলার আট উপজেলা বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। এ সব উপজেলায় ৩৮৮টি আশ্রয়কেন্দ্রে ৩৬ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। জেলায় প্রায় ২০ লাখ মানুষ পানিবন্দি রয়েছে। তাদের কাছে শুকনো খাবার পাঠানোর চেষ্টা চলছে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের উপজেলার কর্মকর্তারা মাঠে রয়েছেন। স্বেচ্ছাসেবকরা কাজ করছেন। সমাজের বিত্তশালী মানুষের বন্যার্তদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আহ্বান জানাচ্ছি। আশা করছি, সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিকসহ বিভিন্ন সংগঠন এগিয়ে আসবে।’