তেইশ বছর আগে ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলা হয় যুক্তরাষ্ট্রে। সেই হামলা ৯/১১ নামে পরিচিত। ওই দিন দুটি উড়োজাহাজ ছিনতাই করে নিউইয়র্কের বিশ্ববাণিজ্য কেন্দ্রের সুউচ্চ জোড়া ভবন বা টুইন টাওয়ারে হামলা চালানো হয়। আরেকটি উড়োজাহাজ আছড়ে পড়ে পেন্টাগনে। হামলা হয় পেনসিলভানিয়াতেও। এতে প্রাণ হারান প্রায় তিন হাজার মানুষ।
টুইন টাওয়ারে যখন উড়োজাহাজ হামলা চালানো হয়, তখন ভবনটিতে ১৭ হাজার ৪০০ মানুষ ছিলেন। নর্থ টাওয়ারে যেখানে হামলা হয়, সে স্থানের কেউই বাঁচতে পারেননি। কিন্তু ১৮ জন সাউথ টাওয়ারের ইমপ্যাক্ট জোনের ওপরের মেঝে থেকে বেঁচে যান। হতাহত মানুষদের মধ্যে ৭৭ দেশের নাগরিক ছিলেন। এই হামলায় নিউইয়র্ক নগরের ৪৪১ উদ্ধারকর্মী নিহত হন। হামলার পর হাজারো মানুষ আহত বা নানা রোগে আক্রান্ত হন। বিষাক্ত ধ্বংসস্তূপে কাজ করা অনেক অগ্নিনির্বাপণকর্মীও ছিলেন।আফগানিস্তানের জঙ্গি সংগঠন আল-কায়েদা এ হামলার পরিকল্পনা করে। মুসলিম বিশ্বের মধ্যে সংঘাত সৃষ্টিতে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের দায়ী করে আল-কায়েদা নেতা ওসামা বিন লাদেনের মূল পরিকল্পনায় এ হামলা চালানো হয়। উড়োজাহাজ ছিনতাইয়ে ১৯ জন যুক্ত ছিলেন। তাদের মধ্যে ৫ জনের তিনটি দল ও ৪ জনের একটি দলে ভাগ হয়ে উড়োজাহাজ ছিনতাই করা হয়।
প্রতিটি দলে এমন একজন ছিলেন, যার উড়োজাহাজ চালানোর প্রশিক্ষণ ছিল। তারা যুক্তরাষ্ট্রেরই উড়োজাহাজ প্রশিক্ষণকেন্দ্রে প্রশিক্ষণ নেন। এর মধ্যে ১৫ জন ছিলেন সৌদি আরবের নাগরিক। দুজন ছিলেন সংযুক্ত আরব আমিরাতের, একজন মিসর এবং একজন লেবাননের।
টুইন টাওয়ারে হামলার এক মাসের কম সময়ের মধ্যে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশের নেতৃত্বে আফগানিস্তানে আল-কায়েদাকে নিশ্চিহ্ন করতে আন্তর্জাতিক জোট হামলা চালায়।
নাইন ইলেভেনের পর পরই সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে দীর্ঘমেয়াদী অভিযানের ঘোষণা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। যে অভিযান হামলার ২৩ বছর পরেও অব্যাহত রয়েছে। ন্যাটোর সদস্যভুক্ত দেশগুলোর সমন্বয়ে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ-মূলমন্ত্র নিয়ে কাজ করছে মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর। শুধু আকাশ পথে হামলা নয়, সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলায় দীর্ঘস্থায়ী অভিযানের কথা উল্লেখ করেছিলেন তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ। যে অভিযান এখনো অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।