ঢাকা সোমবার ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ || ২০শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি
প্রচ্ছদ সারাদেশ ঝুঁকি নিয়ে আগাম আলু চাষে ব্যস্ত কৃষক

ঝুঁকি নিয়ে আগাম আলু চাষে ব্যস্ত কৃষক

বাড়তি লাভের আশায় ঠাকুরগাঁওয়ে প্রতি বছর আগাম আলু চাষ করেন কৃষকরা। জেলার ৫টি উপজেলায় এখনো রোপা-আমন ধান কাটা শেষ হয়নি। তবে সদ্য ফাঁকা হওয়া জমিগুলোতে এখন আগাম আলু চাষে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন চাষিরা।

জেলাজুড়ে ডায়মন, অ্যাস্টেরিক ও কার্টিনাল নামে আগাম জাতের আলু চাষ করা হয়েছে। এ তিন জাতের আলু রোপণের ৫৫ থেকে ৬০ দিনের মাথায় বিক্রির উপযোগী হয়। জেলায় চলতি মৌসুমে ২৭ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত আগাম চাষ হয়েছে ২ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে।

জানা গেছে, এ বছর কৃষকরা বাইরে থেকে আলুর বিজ কিনছে ৮০ থেকে ৮৫ টাকায়। যা গত বছরের তুলনায় দাম বেড়েছে ২৫ থেকে ৩০ টাকা। আর এক মৌসমের আগের হিসেবে এই দাম দ্বিগুণের বেশি। এছাড়াও সারের বস্তা প্রতি দাম বেড়েছে ২০০ টাকা পর্যন্ত, অতিরিক্ত সেচ ও কীটনাশক খরচের ফলে এবার আলু উৎপাদ ব্যায় হচ্ছে অস্বাভাবিক। আগে যেখানে বিঘা প্রতি আলুর উৎপাদন ব্যয় ছিলো ৪০ হাজার টাকা। সেই ব্যয় বেড়ে এখন বিঘা প্রতি খরচ হচ্ছে ৭০ হাজার টাকা।

এবার সরকারি যে আলুর বীজ সরবরাহ করা হচ্ছে; সেই আলুর বীজ জাতভেদে ৫৭ টাকা থেকে শুরু করে ৬৬ টাকা পর্যন্ত কেজি নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু চাহিদার তুলনায় সরকারি বীজ অপ্রতুল। সূত্র জানায়, ২০-২৫ শতাংশ আলুর বীজ উৎপাদন করে বিএডিসি। বাকি আলু কৃষক তাদের ঘরে রাখেন ও বেসরকারি বিভিন্ন এনজিও ও প্রতিষ্ঠান উৎপাদন করে। সরকারি আলুবীজ পর্যাপ্ত না হওয়ায় কৃষক বাধ্য হয়ে বেশি দামে আলুবীজ কিনে থাকেন। গত বছর আলুবীজ ৫০-৬০ টাকায় কিনতে পেরেছিল কৃষক। যা তার আগের মৌসুমে ছিলো ৩০ থেকে ৩৫ টাকা। তবে সেই আলুবীজ এবার ৮০-৮৫ টাকা পর্যন্ত কিনতে হচ্ছে।

সারের বিষয়ে জানা যায়, ডিলাররা ট্রিপল সুপার ফসফেট (টিএসপি) সরকারি মূল্য ১২৫০ টাকায় কেনে কিন্তু বিক্রি করেন ১৩৫০ টাকায়। ডাই-অ্যামনিয়াম ফসফেট (ডিএপি) সরকারি মূল্য ৯৫০ টাকা হলেও বিক্রি হয় ১০৫০ টাকায়। মিউরেট অব পটাশ (এমওপি) সরকারি মূল্য ৯০০ টাকা হলে ১০০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ইউরিয়া সরকারি মূল্য ১২৫০ টাকা হলেও ১৩৫০ টাকায় চাষি পর্যায়ে বিক্রি করবেন।

কিন্তু কৃষককে ট্রিপল সুপার ফসফেট (টিএসপি) ১৭০০ টাকা এবং দেশি ২২০০ টাকা, ডাই-অ্যামনিয়াম ফসফেট (ডিএপি) ১১০০ টাকা ও দেশি ১৫০০ টাকা, মিউরেট অব পটাশ (এমওপি) ১২০০ টাকায় কিনতে হচ্ছে।

কৃষকরা বলছেন, গত দুই মৌসুমে আলুর দাম ভালো বাজার মূল্য দেখেই এ বছর তারা বাড়তি উৎপাদনে ঝুঁকি নিচ্ছেন। তবে সরকারি রেটে বিজ, সার ও কিটনাশক পেলে তাদের উৎপাদন ব্যয় কিছুটা কমানো সম্ভব হতো। সঠিক বাজার মূল্য না পেলে পুঁজি হারাতে হবে।

নারগুন ইউনিয়নের কৃষক তরিকুল বলেন, ‘গত বছর আলুর বীজ, সার ও কীটনাশকের দাম বৃদ্ধি পেয়ে খরচ দ্বিগুণ হয়েছিলো। তবে এবছর খরচ আরও বেড়েছে।’

আকচা ইউনিয়নের কৃষক সোহেল রানা বলেন, গত এক বছর আগেও ৫০ শতক জমিতে আলুর খরচ হয়েছে ৩০-৪০ হাজার টাকা। গত বছর তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫০-৫৫ হাজার টাকা। তবে এবছর একই ৫০ শতক জমিতে খরচ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭০ হাজার টাকা। প্রতি বছর আলুর চাষ করি। তাই সেই ধারাবাহিতায় এবারও করলাম। ভালো বাজার নিয়ে আমি খুবই শঙ্কায় আছি।

ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক কৃষিবিদ নাজমা আক্তার বলেন, আমরা নিয়মিত মাঠ পর্যায়ে গিয়ে আলু চাষিদের বিভিন্ন পরামর্শ দিচ্ছি। ঠাকুরগাঁওয়ের মাটি ও প্রকৃতি আলুর জন্যে যথেষ্ট উপযোগী। তবে এবার উৎপাদন ব্যয় বেশি। আশা করি সঠিক বাজার মূল্যের মাধ্যমে কৃষকরা তাদের খরচ তুলতে সক্ষম হবে।

0 FacebookTwitterPinterestEmail

অনুসন্ধান

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম

ফেসবুকে আমরা

সম্পাদক ও প্রকাশক

মুহাম্মদ মনিরুজ্জামান ভূঁইয়া (তুহিন)

নির্বাহী সম্পাদক

সোনিয়া রহমান

অফিসঃ

৪৯ মতিঝিল (৮ম তলা), শাপলা ভবন, শাপলা চত্বর, ঢাকা - ১০০০

ই-মেইলঃ

rightwayciezs@gmail.com

টেলিফোনঃ

+৮৮ ০১৭১২-৭৭৭ ৩৬৩

মার্কেটিংঃ

+৮৮ ০১৯৪৮- ৯০০ ৯১১

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি। সকল স্বত্ব rightwaynews24.com কর্তৃক সংরক্ষিত