ওরা অনেক বড় হবে
‘মানুষ মানুষের জন্য, জীবন জীবনের জন্য’— এই কথাগুলো শুধু গানের কথা নয় বাঙালির প্রাণের কথাও। তার বাস্তব প্রমাণ মিলেছে বন্যার্তদের সাহায্যের ক্ষেত্রে। দেশের বিভিন্ন জেলায় বন্যা কবলিত মানুষের সাহায্যের জন্য যে যা পারছেন তাই নিয়েই ছুটে আসছেন সেচ্ছাসেবকদের কাছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে ত্রাণ দিতে এসে হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন সব শ্রেণী-পেশার মানুষ। অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে ১১জন এতিম শিশু।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গণত্রাণ সংগ্রহ কর্মসূচিতে বন্যার্তদের জন্য সাহায্যের হাত বাড়িয়েছেন স্যার সলিমুল্লাহ মুসলিম এতিমখানার এতিমরা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এতিমদের এই কাজের দারুণ প্রশংসা করছেন নেটিজেনরা। নিজেদের জমানো টাকা থেকেই দান করেছে তারা।
এতিমখানার জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আশিকুর রহমান বলেন, ‘বন্যার্তদের জন্য টিএসসিতে ত্রাণ সংগ্রহ করা হচ্ছে এই খবর চারপাশে ছড়িয়ে পড়েছে। আমাদের বাচ্চারাও এই খবর জানতে পেরে নিজেদের জমানো টাকা গণত্রাণ তহবিলে জমা দেওয়ার অনুমতি চায়। আমরাও তাদের অনুমতি দেই। আমাদের বাচ্চারা যতটুকু পেরেছে সাহায্য করেছে।’
স্যার সলিমুল্লাহ মুসলিম এতিমখানার শিশুদের বন্যার্তদের জন্য অর্থ জমা দেওয়ার তথ্য নিশ্চিত করেছেন গণত্রাণ সংগ্রহকারী একাধিক সেচ্ছাসেবী। তারা জানিয়েছেন, স্যার সলিমুল্লাহ মুসলিম এতিমখানার ১১ জন শিক্ষার্থী এসে ১১ হাজারের মতো টাকা জমা দিয়েছে।’
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সুমন আহমেদ নামের একজন লিখেছেন, ‘দান করার জন্য আসলে বড় মনের দরকার হয়, তারা তাই প্রমাণ করলো। ওরা অনেক বড় হবে, এই কামনা।’
মোস্তফা কামাল নামের আরেকজন লিখেছেন, ‘ওদের ১১ হাজার টাকা ১১ লক্ষ টাকার সমান।’
জানা যায়, ১৯০৯ সালে নবাব স্যার সলিমুল্লাহ ঢাকায় ইসলামিয়া এতিমখানা প্রতিষ্ঠা করেন। পরবর্তীতে এর নামকরণ হয় স্যার সলিমুল্লাহ মুসলিম এতিমখানা। এটি আহসান মঞ্জিলের নিকটবর্তী কুমারটুলিতে একটি ভাড়া বাড়িতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এতিমখানাটি পরিচালনার জন্য স্যার সলিমুল্লাহ প্রতি মাসে ২০০রূপি অনুদান হিসেবে দান করতেন। ১৯১২ সালে এতিমখানা পরিচালনার জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়। এতিমের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় ১৯১৩ সালে লালবাগ দুর্গের নিকটবর্তী আজিমপুরে এটি স্থানান্তর করা হয়।