ঢাকা বুধবার ২২শে অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ৬ই কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ || ২৯শে রবিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি
প্রচ্ছদ ভ্রমণ ‘ছুটির দিন যেন অন্যরকম ঈদ’

‘ছুটির দিন যেন অন্যরকম ঈদ’

ঈদের ছুটির রোদেলা দিনে রাজধানীর মিরপুর যেন রূপ নিয়েছে এক উৎসবে।

ঈদের ছুটির রোদেলা দিনে রাজধানীর মিরপুর যেন রূপ নিয়েছে এক উৎসবে।

পবিত্র ঈদুল আজহার দ্বিতীয় দিনে রবিবার (৮ জুন)  দুপুর হতেই মানুষের ঢল নামে জাতীয় চিড়িয়াখানায়। শিশুদের হাত ধরে বাবা-মা, দাদা-দাদি কিংবা মামা-মামিরা এসেছেন প্রিয়জনদের সঙ্গে।

গরমকে উপেক্ষা করে রাজধানী ও আশপাশের অঞ্চল থেকে নানা বয়সী মানুষ জড়ো হয়েছেন বন্যপ্রাণীর দেখা পেতে, প্রাণের ছোঁয়া খুঁজতে। দুপুর থেকেই চিড়িয়াখানার প্রবেশদ্বার হয়ে ওঠে সরগরম। দীর্ঘ লাইন, টিকিটের ধাক্কাধাক্কি, হকারদের হাঁকডাক, রঙিন খেলনার আকর্ষণ-সব মিলিয়ে এক নিখাদ উৎসবের আবহ।

সবচেয়ে বেশি উচ্ছ্বাস শিশুদের

চিড়িয়াখানায় পা রেখেই শিশুদের চোখ যেন ছুটে যায় বানরের খাঁচার দিকে। কারও হাতে কলা, কারও হাতে বাদাম। ছোট্ট আতিক আনন্দে উচ্ছ্বসিত হয়ে বলল, “আমি বানরকে খাবার দিছি। ও কাছে আসছিল, তখন অনেক মজা লাগছে।”

বাঘ, সিংহ, হরিণ আর রঙিন পাখিদের দেখে চঞ্চল হয়ে উঠছে কচিকাঁচারা। তাদের চোখে যেন এক রূপকথার জগৎ। বড়রাও যেন ফিরে গেছেন নিজেদের শৈশবের কোনো এক বিকেলে। কেউ ক্যামেরায় বন্দি করছেন প্রাণীর ছবি, কেউ ভিডিও করছেন সন্তানদের উচ্ছ্বসিত মুখ।

বিশ্রাম ও নিরাপত্তায় স্বস্তি
জাতীয় চিড়িয়াখানার বিস্তৃত সবুজ প্রান্তর, ছায়াঘেরা বিশ্রাম স্থান ও প্রশস্ত হাঁটার পথ দর্শনার্থীদের গরমের মধ্যেও কিছুটা স্বস্তি দিয়েছে। কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে বাড়তি নিরাপত্তা ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার ব্যবস্থা।

চিড়িয়াখানার কিউরেটর ড. মো. আতিকুর রহমান জানান, “ঈদের ছুটিতে প্রতিদিন ৭০ থেকে ৯০ হাজার দর্শনার্থী আসছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ছয় দিনে ছয় লাখের বেশি দর্শনার্থী হতে পারে।”

বিরক্ত দর্শক 
তবে উৎসবের এই আনন্দে কিছু অসন্তোষও মিশে রয়েছে। হকারদের ঘিরে তৈরি হওয়া ভিড় অনেক দর্শনার্থীকেই বিরক্ত করছে। সরকারি চাকরিজীবী করিম উদ্দিন বলেন, “বাচ্চাদের নিয়ে এক খাঁচা থেকে আরেক খাঁচায় যেতেই হকাররা বারবার কিছু কিনতে বলছে। এতে বিরক্ত হচ্ছি।”

বিকেলে ভিড় বাড়ে
চিড়িয়াখানর একজন কর্মচারী শাহ আলম বলেন, “শনিবারের তুলনায় আজ দর্শনার্থীর সংখ্যা অনেক বেশি।”

পান বিক্রেতা আলম বলেন, “রোদ একটু কম হলে ভেতরে থাকত আরো লোক। তবে যারা ঢুকছেন, তারা বেশি সময় থাকছেন না। বিক্রিও কম।”

বেসরকারি চাকরিজীবী আহমেদ বলেন, “গ্রাম থেকে মা ও বাবা এসেছেন। সবাইকে নিয়ে বের হলাম। শিশুরা খুব উপভোগ করছে।”

টিকিট লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা বাছির জামান বললেন, “ছেলে-মেয়েসহ ১৬ জন এসেছি কেরাণীগঞ্জ  থেকে। ভেবেছিলাম খুব ভিড় হবে। কিন্তু সহজেই টিকিট পেয়েছি, এটা ভালো লেগেছে।”

চিড়িয়াখানার ১০টি টিকিট কাউন্টারের মধ্যে চালু রয়েছে চারটি। ফলে কিছুটা অসুবিধা হলেও দর্শনার্থীরা ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করছেন। বাঁশ দিয়ে তৈরি অস্থায়ী গেট দিয়েও প্রবেশ করতে দেখা গেছে অনেককে।

দর্শনার্থী বশির হোসেন বললেন, “ছুটির দিনে নাগরিক জীবনের রুটিন ভেঙে পরিবার নিয়ে জাতীয় চিড়িয়াখানায় সময় কাটানো এখন এক ধরনের শহুরে সংস্কৃতি। গরম, ভিড়, হকারদের হট্টগোল সব পেরিয়ে মানুষ খুঁজছে কিছু স্বস্তি, কিছু আনন্দ। আর সেই আনন্দেই প্রাণ জেগে ওঠে পশুপাখির ঘেরা এই ছোট্ট জগতে। মিরপুরের এই সবুজ পরিসরে ছুটির দিন যেন হয়ে ওঠে এক অন্যরকম ঈদ।”

0 FacebookTwitterPinterestEmail

অনুসন্ধান

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম

ফেসবুকে আমরা

সম্পাদক ও প্রকাশক

মুহাম্মদ মনিরুজ্জামান ভূঁইয়া (তুহিন)

নির্বাহী সম্পাদক

সোনিয়া রহমান

অফিসঃ

৪৯ মতিঝিল (৮ম তলা), শাপলা ভবন, শাপলা চত্বর, ঢাকা - ১০০০

ই-মেইলঃ

rightwayciezs@gmail.com

টেলিফোনঃ

+৮৮ ০১৭১২-৭৭৭ ৩৬৩

মার্কেটিংঃ

+৮৮ ০১৯৪৮- ৯০০ ৯১১

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি। সকল স্বত্ব rightwaynews24.com কর্তৃক সংরক্ষিত