ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির পর গাজায় শান্তির আশায় যখন ফিলিস্তিনিরা কিছুটা স্বস্তি খুঁজছিলেন, ঠিক সেই সময় রক্তাক্ত সহিংসতায় জড়িয়ে পড়েছে হামাস। সংগঠনটি এখন নিজের প্রতিদ্বন্দ্বী দল ও গোত্রগুলোর বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে হত্যা, গুলি ও দমননীতিতে নেমেছে। যুদ্ধের সময় দখলদার ইসরায়েলকে সহায়তা করায় প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস।
মার্কিন মধ্যস্থতায় অর্জিত যুদ্ধবিরতির পর হামাস যখন ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি দিয়েছে, তখনই তারা গাজায় নিজেদেরই মানুষদের বিরুদ্ধে অস্ত্র তুলে নিয়েছে।
ইরাকি সংবাদমাধ্যম শাফাক নিউজ জানায়, হামাসের ফায়ারিং স্কোয়াড অন্তত আটজনকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করেছে। ধারণা করা হচ্ছে, এরা হামাসবিরোধী কোনো সংগঠনের সদস্য ছিলেন।
ইসরায়েলি গণমাধ্যম ইয়ানেট জানায়, এ পর্যন্ত ৫০ জনের বেশি প্রতিদ্বন্দ্বী সদস্য নিহত হয়েছেন।
এই সহিংসতা শুরু হয় এমন সময়, যখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রকাশ্যে মন্তব্য করেছিলেন যে, গাজার অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা এখন হামাসের হাতে থাকতে পারে।
প্রকাশিত ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, মুখোশধারী নিরাপত্তা সদস্যরা চোখ বাঁধা ও হাত বেঁধে রাখা মানুষদের গুলি করে হত্যা করছে। হামাস দাবি করেছে, এরা অপরাধমূলক কার্যকলাপ ও সাম্প্রতিক দুই বছরের যুদ্ধে ইসরায়েলি বাহিনীর সঙ্গে সহযোগিতা করেছিল।
পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে গাজার প্রভাবশালী ডগমুশ গোত্রের সঙ্গে সংঘর্ষে। এ সংঘাতে ওই গোত্রের ৫২ সদস্য নিহত হন, আর হামাসেরও ১২ জন যোদ্ধা মারা যায়—এর মধ্যে হামাস নেতা বাসেম নাইমের ছেলেও রয়েছেন।
হামাসের অভিযোগ, ডগমুশ গোত্র ইসরায়েলের কাছ থেকে সহায়তা পাচ্ছিল। ইসরায়েলি কর্মকর্তারা স্বীকার করেছেন যে, সাম্প্রতিক মাসগুলোতে গাজার কিছু স্থানীয় মিলিশিয়াকে তারা সীমিত অস্ত্র ও সাহায্য দিয়েছে।
ওয়াশিংটন ফ্রি বিকন–এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হামাসের এই সহিংসতা আসলে একটি “বার্তা”। ট্রুজম্যানের সহকর্মী আহমাদ শারাওয়ি বলেন, “দুই বছরের যুদ্ধ শেষে হামাস এখন তাদের গুহা থেকে বেরিয়ে এসে প্রতিদ্বন্দ্বীদের সঙ্গে হিসাব চুকাচ্ছে।”
তিনি আরও বলেন, “গাজার অনেক গোত্র ও সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে, কিন্তু এই মুহূর্তের সহিংসতা দেখাচ্ছে, হামাস এখনো অস্ত্র ছাড়তে রাজি নয়। আসন্ন নিরস্ত্রীকরণ আলোচনায় এটি বড় বাধা হয়ে দাঁড়াবে।”