ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় আটটি স্থানে এলাকাভিত্তিক সড়ক ভেঙে গেছে। এতে এলাকায় যেমন পানি ঢুকছে তেমনিভাবে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
এদিকে, সময়ের সাথে সাথে আখাউড়ার বন্যা পরিস্থিতি অবনতি হচ্ছে। বৃহস্পতিবার পানি বেড়েছে। এর আগে বুধবার (২১ আগস্ট) রাতে উপজেলার খলাপাড়া এলাকায় বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় পরিস্থিতির অবনতি হয়। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়ে কয়েশ’ পরিবার।
বৃহস্পতিবার দুপুর নাগাদ মাত্র ১০০টির মতো পরিবার আশ্রয় কেন্দ্রে আসতে পেরেছেন। এদিন সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান সকালে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা ঘুরে দেখেন।
তিনি জানান, পরিস্থিতি এখনো নিয়ন্ত্রণের মধ্যে আছে। সেনাবাহিনীসহ অন্যান্যদের সহযোগিতায় বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবেলায় কাজ করা হচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মনজুরুল আলম জানান, হাওড়া নদী ও জাজির খালসহ বিভিন্নস্থানে পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি রয়েছে। এখন যে পানি আছে তা থেকে আরও ৩০ শতাংশ বেড়ে যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আর সেটি হলে আরও নতুন এলাকা প্লাবিত হতে পারে।
ভারি বর্ষণ ও ভারতের পাহাড়ি ঢলে ভারত সীমান্তবর্তী আখাউড়ার নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির উদ্ভব হয় মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) রাত থেকে। বুধবার সন্ধ্যা নাগাদ ৩৪টি গ্রাম প্লাবিত হয়। পানিবন্দি হয়ে পড়ে প্রায় সাড়ে পাঁচশ’ পরিবার। এছাড়াও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ধানি জমি, শাকসবজির জমিসহ বিভিন্ন মাছের ঘের। বৃহস্পতিবার আরো নতুন এলাকা প্লাবিত হয়। বন্ধ রয়েছে আখাউড়া-আগরতলা সড়ক যোগাযোগ। স্থলবন্দর দিয়ে বাণিজ্য ও যাত্রী পারাপার।
স্থানীয় ও প্রশাসন সূত্র জানায়, মঙ্গলবার রাত থেকে আখাউড়ায় ভারি বর্ষণ শুরু হয়। সকাল থেকে বন্দরের পাশ বয়ে যাওয়া খাল দিয়ে ভারত থেকে তীব্র বেগে পানি ঢুকতে থাকে। এক পর্যায়ে স্থলবন্দর বাউতলা, বীরচন্দ্রপুর, কালিকাপুর, বঙ্গেরচর, সাহেবনগরসহ অন্তত ৩৪টি গ্রামে পানি ঢুকে পড়ে। ভেঙে যায় গাজীরবাজার এলাকার অস্থায়ী সেতু। বন্ধ হয়ে পড়ে বন্দরের বাণিজ্য ও যাত্রী পারাপার। নতুন করে খলাপাড়া, ইটনা, রাজেন্দ্রপুরসহ বিভিন্ন গ্রাম পানিতে তলিয়ে যায়।
এর আগে মঙ্গলবার খলাপাড়া এলাকায় হাওড়া নদীর বাঁধের কিছু অংশ ভেঙে পানি ঢুকতে শুরু করে। খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) গাজালা পারভীন রুহি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ঘুরে দেখেন। বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আসেন জেলা প্রশাসক। এছাড়া সেনাবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস, সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্মীরা কাজ করে যাচ্ছেন।
এদিকে সংশ্লিষ্টদেরকে সহায়তা দিচ্ছেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা। এছাড়া শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে ত্রাণ বিতরণের উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে। তবে তারা আপাতত পানি বন্দি হয়ে পড়া লোকজনকে উদ্ধারে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন।
আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) গাজালা পারভীন রুহি জানান, বাঁধের অংশ ভেঙে প্লাবিত এলাকা বেড়ে যায়। এলাকাভিত্তিক বিভিন্ন সড়কের আটটি অংশ পানি তোড়ে ভেঙে গেছে। দুর্গতদের জন্য শুকনো খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়াও জেলা প্রশাসন থেকে ত্রাণ বরাদ্দ পাওয়ার সাথে সাথে দুর্গতদের মাঝে ২০ কেজি করে চাল দেওয়া হবে।